ছোট এক বাচ্চা ছেলে একদিন তার বাবাকে জিজ্ঞেস করলো- রাজনীতি কি জিনিস?
বাবা বললেন- খুব সুন্দর প্রশ্ন। এসো বুঝিয়ে দেই। ধরো আমি এই পরিবারে আয়-রোজগার করি। অর্থাৎ আমি হচ্ছি পুজিঁবাদি। সংসারের কোথায় কোনো টাকা-পয়সা খরচ হবে সেই সিদ্ধান্ত নেন তোমার মা। তার মানে তোমার মা হচ্ছে সরকার। আমরা দু’জনে মিলে তোমার যত্ন করি, যা কিছু দরকার কিনে দিই, কাজেই তুমি হলে জনগণ। আর ধরো বাড়ির কাজের মেয়েটা, সে হচ্ছে শ্রমজীবী। তারপর তোমার ছোট ভাইটা- যে কিনা এখনো ফিডার খায়, তাকে বলতে পারো ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।
এখন এই লোকগুলোর মধ্যে সম্পর্কটা কি? সেটা প্রথমে খুজেঁ বের করো। তারপর সেখান থেকে নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে রাজনীতি কি বুঝতে চেষ্টা করো। সবকিছু তোমার কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে।
বাচ্চা ছেলেটা এতগুলো লোকের মধ্যে সম্পর্কের জটিল হিসেব-নিকেশ মাথায় নিয়ে ঘুমাতে গেল। কিন্তু চিন্তায় তার ঘুম এলো না। সারা রাত বিছানায় ছটফট করতে লাগল। শেষ রাতের দিকে ছোট ভাইয়ের কান্নার শব্দ শুনতে পেল। সে ছোট ভাইয়ের কান্নার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে আবিষ্কার করল- ছোট ভাই বিছানায় প্রস্রাব করে দিয়েছে, তাই কাঁদছে। বাচ্চা ছেলেটা বাবা-মা’র ঘরে ঢুকে দেখল, মা রীতিমতো নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে, কিন্তু পাশে বাবা নেই। বাচ্চা ছেলেটা বাবাকে শেষ পর্যন্ত খুঁজে পেল রান্নাঘরে- যেখানে কি না বাড়ির কাজের মেয়েটা ঘুমায়। সবকিছু দেখে-শুনে বাচ্চা ছেলেটা নির্বিকার চিত্তে তার বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। পরদিন খাবার টেবিলে ছেলেটা তার বাবাকে বলল- রাজনীতি কি জিনিস? আমি বোধহয় মোটামুটি বুঝতে পেরিছি।
বাবা বললেন- খুবই ভালো, এখন বলো কি বুঝলে?
বাচ্চা ছেলেটা বলল- পুজিঁবাদী সমাজ যখন শ্রমজীবী সমাজের ওপর শোষণ-অত্যাচার করে, সরকার তখন নাক ডেকে ঘুমায়। জনগণ সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে যায়। আর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তখন বাস করে নোংরা পরিবেশে।