প্রাণীকুলের মধ্যে মানুষের শ্রেষ্ঠ বন্ধু কুকুর। কুকুর কখনো খেলার সাথী, কখনো পাহাড়াদার, আবার কখনো বা অন্ধের পথ প্রদর্শক। কুকুর মানুষের সবচেয়ে বিশ্বাসী বন্ধু। কুকুরের সঙ্গে মানুষের নিবিড় সম্পর্ক সুদূর অতীত থেকেই বহমান। বিশ্বস্ত ও অনুগত হিসেবে কুকুরের যেমন সুখ্যাতি আছে, তেমনি পোষা কুকুরের প্রতি মানুষের ভালোবাসার নজিরও অনেক। মানুষ আর কুকুরের এমন নজির বিহীন ভালোবাসায় তাজ্জব তাবৎ মানুষ। আমরা সবাই জানি, কুকুর খুব বিশ্বস্ত প্রাণী। নিজের জীবন দিয়েও কুকুর তার মনিবের জীবন রক্ষা করে। বিশ্বের সব উন্নত, সভ্য দেশগুলিতে মানুষের মত কুকুর-বিড়ালেরও অনেক সামাজিক অধিকার রয়েছে।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দেখা যায়, অনেক মানুষ কুকুরকে নিজের সন্তানের মত ভালবেসে লালন-পালন করে। কুকুরের পেছনে অনেক পয়সা খরচ করে। শীতকালে কুকুরের জন্য আলাদা গরম জামা-কাপড় কেনে। কুকুরের অসুখ হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। এক বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুমি কুকুরের জন্য এত কষ্ট করো, সময় দাও, পয়সা খরচ করো কেন? তুমি ইচ্ছা করিলে কোনো সুবিধা বঞ্চিত শিশুকে দত্তক নিতে পার। তাহলে তোমারও ভাল লাগত আর একজন সুবিধা বঞ্চিত মানুষ পৃথিবীর আলো দেখতে পেতো তোমার উছিলায়। তার জবাব খুব সংক্ষিপ্ত ছিল, “মানুষ বেঈমানি করে কিন্তু কুকুর সেটা করে না।”
আমাদের দেশেও অনেকে কুকুর পোষে। সাধারণ মানুষ সাধারণ কুকুর আর বড়লোকে বিদেশী প্রজাতির কুকুর পোষে। তাদের কাছে কুকুর পোষা কোনো সখের ব্যাপার নয়, বরং আভিজাত্যের প্রতীক। তাছাড়া প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিদেশী কুকুর বাসায় থাকলে কোনো অনাহুত মানুষ বাসায় ঢুকতে সাহস করবে না, এটাও একটা কারণ। রাস্তার কুকুর নিয়ে কেউ কি কখনো ভাবে? যেই দেশে অর্ধ মিলিয়ন শিশু পথে ঘুমায়। না খেয়ে, আধ পেটা খেয়ে, মানুষের পায়ের লাথি, হাতের মার খেয়ে। চরম অবহেলায় দেশের সকলের দৃষ্টিসীমার ভিতরে থেকেও, না থাকার মত হয়ে বাঁচে সেই দেশে রাস্তার নেড়ি কুকুর নিয়ে কে ভাবে? এত দয়ামায়া অন্ততঃ আমাদের দেশের মানুষের মনে নাই। অসুখ-বিসুখ, খাবারের অভাবে মাথা খারাপ না হলে কিংবা খুব বেশি জ্বালাতন না করলে এসব কুকুর কিন্তু কখনোই কোনো মানুষকে আক্রমণ করে না। মানুষ কিন্তু মানুষকে বিনা কারণে আক্রমণ করে বসতে পারে ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য। কিন্তু রাস্তার কুকুর শুধুই আত্মরক্ষার্থে কাউকে আক্রমণ করে, এ ছাড়া নয়। আমাদের দেশে এসব রাস্তার কুকুর ধরে মেরে ফেলার ইতিহাস আছে। এটা সত্যি কথা যে, রাস্তার কুকুরের শরীরে অনেক রোগ বাসা বাঁধে। অন্য বিষাক্ত বন্য পশুর সাথে বনে বাদাড়ে কাটিয়ে, ওদের সাথে নিজের খাদ্য আর জীবন বাঁচানোর যুদ্ধে অনেক বিষাক্ত আঘাত হজম করে এসব নেড়ি কুকুর। নিজের শরীরে বহন করে অনেক রোগের বিষাক্ত জীবানু। রাস্তার কুকুরের শরীরে র্যাবিস থাকে। র্যাবিস হলো এক ধরনের মারাত্বক ভাইরাস। যা অন্য পশুর কামড় খেয়ে ওদের মুখের লালার সাথে কুকুরের শরীরের রক্তে মিশে যায়। কিংবা কোনো ক্ষতস্থানে বসা মশা মাছির মাধ্যমেও সংক্রামিত হয়। তেমন কোনো কুকুর কাউকে কামড়ালে কুকুরের মুখের লালা থেকে সেই ভাইরাস মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়। কিন্তু সাথে সাথে চিকিৎসা নিতে পারলে এই ভাইরাসে কেউ মরে না। সেই কারণেই কুকুর কামড়ালে খুব অল্প সময়ের ভিতর সেই মানুষকে ইনজেকশন নিতে হয়।
একটা সময় ছিল অন্য দশ জনের মত আমার ভিতরেও এসব কুকুর কেন, রাস্তার মানুষদের জন্যও কোনো দয়ামায়া ছিল না। যেহেতু আমাকে শেখানো হয় নাই, আমারও ধারণা ছিল, রাস্তার মানুষ মানেই সব চোর আর রাস্তার কুকুর মানেই হল উটকো ঝামেলা। যে কোনো সময় ঘরে ঢুকে আমাদের খাবারে মুখ বসাতে পারে। কাউকে কামড়ে দিতে পারে। ওরা নোংরা, রাস্তায় থাকে তাই ওদের শরীরে অনেক রোগ আছে।কখনো ইচ্ছা হয় নাই, মনে মায়া জাগে নাই ঘর থেকে একটু খাবার এনে দিতে। মানুষের জন্যেই মায়া জাগে না মনে, তাহলে রাস্তার নেড়ি কুকুরের জন্য কেমন করে মায়া হবে? বরং পথের পাশে দেখলেই ঢিল ছুড়ে মারতাম। চলার পথে শুয়ে থাকলে লাথি মেরে সরিয়ে দিতাম। কই, ওরা কখনোই সেজন্য আমাকে কামড় দেয় নাই। লাথি খেয়েও ‘কেঁউ কেঁউ’ করে কেঁদে সরে গিয়ে পালিয়ে যেত না বরং রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থেকে করুণ দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকত। তখন সেই করুণ দৃষ্টি আমার মনে কোনো সহানুভূতি জাগায় নাই। কিন্তু, কেন জানি না এখন সেই সব করুণ দৃষ্টি চোখের সামনে ভেসে বেড়ায়। হয়ত মানবিক পরিবেশে মিশে আমার ভিতর মানবিকতা জেগে উঠছে। মনে আছে, বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে এসব নেড়ি কুকুরদের ভিতর প্রাকৃতিকভাবে যৌন তৎপরতা বেড়ে যেত। এমন কোনো কুকুরজোড়াকে পেলে মানুষ যেন তাদের জ্বালাতন করে ভীষণ আনন্দ পেত। তাদের ঢিল মেরে, লাঠিপেটা করে অস্থিরভাবে অত্যাচার করত একদল মানুষ। তার সাথে রাস্তায় ভিড় করে দাঁড়িয়ে আরো বেশি মানুষ হাসাহাসি করত। ঠিক যেমন করে একদল মানুষ যখন রাজন জাতীয় কিশোরদের হাত পা বেঁধে অত্যাচার করে, আরেক দল মানুষ সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে সেটা উপভোগ করে কিন্তু কেউ বাধা দেয় না। কখনো কেউ বলে নাই যে এমন করা ঠিক না। মানুষের যেমন শারিরীক চাহিদা আছে, পশুদেরও আছে। তখন তো আমিও এসব দেখে আহত হতাম না। বরং আনন্দ পেতাম। এখন মনে হলে অপরাধবোধ জেগে ওঠে। হয়ত এক সময় দেশের সব পথের কুকুর বিড়ালের মত পশুরা রোগ মুক্ত হয়ে একটা ঘরে ঘর খুঁজে পায় সেটাই হবে অনেক বড় মহৎ একটা কাজ। তাহলে হয়ত এক সময় আমাদের দেশের গৃহে বসবাস করা মানুষ রাস্তা থেকে একজন করে পথকলি শিশুকে নিজের করে নিজের ঘরে নিয়ে যাবে। ষোল কোটি মানুষের দেশে, পৃথিবীর অর্থনীতির লিস্টে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে স্বীকৃত বাংলাদেশে রাস্তায় ঘুমানো সুবিধাবঞ্চিত মাত্র অর্ধ মিলিয়ন শিশু কেন একটা করে ঘর খুঁজে পাবে না? এটা কি হয় নাকি? মানুষ যদি রাস্তার কুকুর বিড়ালের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করতে পারে এত মানবিক হয়ে, একদিন দেশের সব টোকাইরাও এমন সচেতন মানুষদের সহায়তায় সুস্থ, স্বাভাবিক আলোকিত জীবনের সন্ধান পেয়ে যাবে, আমি খুব আশাবাদী।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দেখা যায়, অনেক মানুষ কুকুরকে নিজের সন্তানের মত ভালবেসে লালন-পালন করে। কুকুরের পেছনে অনেক পয়সা খরচ করে। শীতকালে কুকুরের জন্য আলাদা গরম জামা-কাপড় কেনে। কুকুরের অসুখ হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। এক বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুমি কুকুরের জন্য এত কষ্ট করো, সময় দাও, পয়সা খরচ করো কেন? তুমি ইচ্ছা করিলে কোনো সুবিধা বঞ্চিত শিশুকে দত্তক নিতে পার। তাহলে তোমারও ভাল লাগত আর একজন সুবিধা বঞ্চিত মানুষ পৃথিবীর আলো দেখতে পেতো তোমার উছিলায়। তার জবাব খুব সংক্ষিপ্ত ছিল, “মানুষ বেঈমানি করে কিন্তু কুকুর সেটা করে না।”
আমাদের দেশেও অনেকে কুকুর পোষে। সাধারণ মানুষ সাধারণ কুকুর আর বড়লোকে বিদেশী প্রজাতির কুকুর পোষে। তাদের কাছে কুকুর পোষা কোনো সখের ব্যাপার নয়, বরং আভিজাত্যের প্রতীক। তাছাড়া প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিদেশী কুকুর বাসায় থাকলে কোনো অনাহুত মানুষ বাসায় ঢুকতে সাহস করবে না, এটাও একটা কারণ। রাস্তার কুকুর নিয়ে কেউ কি কখনো ভাবে? যেই দেশে অর্ধ মিলিয়ন শিশু পথে ঘুমায়। না খেয়ে, আধ পেটা খেয়ে, মানুষের পায়ের লাথি, হাতের মার খেয়ে। চরম অবহেলায় দেশের সকলের দৃষ্টিসীমার ভিতরে থেকেও, না থাকার মত হয়ে বাঁচে সেই দেশে রাস্তার নেড়ি কুকুর নিয়ে কে ভাবে? এত দয়ামায়া অন্ততঃ আমাদের দেশের মানুষের মনে নাই। অসুখ-বিসুখ, খাবারের অভাবে মাথা খারাপ না হলে কিংবা খুব বেশি জ্বালাতন না করলে এসব কুকুর কিন্তু কখনোই কোনো মানুষকে আক্রমণ করে না। মানুষ কিন্তু মানুষকে বিনা কারণে আক্রমণ করে বসতে পারে ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য। কিন্তু রাস্তার কুকুর শুধুই আত্মরক্ষার্থে কাউকে আক্রমণ করে, এ ছাড়া নয়। আমাদের দেশে এসব রাস্তার কুকুর ধরে মেরে ফেলার ইতিহাস আছে। এটা সত্যি কথা যে, রাস্তার কুকুরের শরীরে অনেক রোগ বাসা বাঁধে। অন্য বিষাক্ত বন্য পশুর সাথে বনে বাদাড়ে কাটিয়ে, ওদের সাথে নিজের খাদ্য আর জীবন বাঁচানোর যুদ্ধে অনেক বিষাক্ত আঘাত হজম করে এসব নেড়ি কুকুর। নিজের শরীরে বহন করে অনেক রোগের বিষাক্ত জীবানু। রাস্তার কুকুরের শরীরে র্যাবিস থাকে। র্যাবিস হলো এক ধরনের মারাত্বক ভাইরাস। যা অন্য পশুর কামড় খেয়ে ওদের মুখের লালার সাথে কুকুরের শরীরের রক্তে মিশে যায়। কিংবা কোনো ক্ষতস্থানে বসা মশা মাছির মাধ্যমেও সংক্রামিত হয়। তেমন কোনো কুকুর কাউকে কামড়ালে কুকুরের মুখের লালা থেকে সেই ভাইরাস মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়। কিন্তু সাথে সাথে চিকিৎসা নিতে পারলে এই ভাইরাসে কেউ মরে না। সেই কারণেই কুকুর কামড়ালে খুব অল্প সময়ের ভিতর সেই মানুষকে ইনজেকশন নিতে হয়।
একটা সময় ছিল অন্য দশ জনের মত আমার ভিতরেও এসব কুকুর কেন, রাস্তার মানুষদের জন্যও কোনো দয়ামায়া ছিল না। যেহেতু আমাকে শেখানো হয় নাই, আমারও ধারণা ছিল, রাস্তার মানুষ মানেই সব চোর আর রাস্তার কুকুর মানেই হল উটকো ঝামেলা। যে কোনো সময় ঘরে ঢুকে আমাদের খাবারে মুখ বসাতে পারে। কাউকে কামড়ে দিতে পারে। ওরা নোংরা, রাস্তায় থাকে তাই ওদের শরীরে অনেক রোগ আছে।কখনো ইচ্ছা হয় নাই, মনে মায়া জাগে নাই ঘর থেকে একটু খাবার এনে দিতে। মানুষের জন্যেই মায়া জাগে না মনে, তাহলে রাস্তার নেড়ি কুকুরের জন্য কেমন করে মায়া হবে? বরং পথের পাশে দেখলেই ঢিল ছুড়ে মারতাম। চলার পথে শুয়ে থাকলে লাথি মেরে সরিয়ে দিতাম। কই, ওরা কখনোই সেজন্য আমাকে কামড় দেয় নাই। লাথি খেয়েও ‘কেঁউ কেঁউ’ করে কেঁদে সরে গিয়ে পালিয়ে যেত না বরং রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থেকে করুণ দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকত। তখন সেই করুণ দৃষ্টি আমার মনে কোনো সহানুভূতি জাগায় নাই। কিন্তু, কেন জানি না এখন সেই সব করুণ দৃষ্টি চোখের সামনে ভেসে বেড়ায়। হয়ত মানবিক পরিবেশে মিশে আমার ভিতর মানবিকতা জেগে উঠছে। মনে আছে, বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে এসব নেড়ি কুকুরদের ভিতর প্রাকৃতিকভাবে যৌন তৎপরতা বেড়ে যেত। এমন কোনো কুকুরজোড়াকে পেলে মানুষ যেন তাদের জ্বালাতন করে ভীষণ আনন্দ পেত। তাদের ঢিল মেরে, লাঠিপেটা করে অস্থিরভাবে অত্যাচার করত একদল মানুষ। তার সাথে রাস্তায় ভিড় করে দাঁড়িয়ে আরো বেশি মানুষ হাসাহাসি করত। ঠিক যেমন করে একদল মানুষ যখন রাজন জাতীয় কিশোরদের হাত পা বেঁধে অত্যাচার করে, আরেক দল মানুষ সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে সেটা উপভোগ করে কিন্তু কেউ বাধা দেয় না। কখনো কেউ বলে নাই যে এমন করা ঠিক না। মানুষের যেমন শারিরীক চাহিদা আছে, পশুদেরও আছে। তখন তো আমিও এসব দেখে আহত হতাম না। বরং আনন্দ পেতাম। এখন মনে হলে অপরাধবোধ জেগে ওঠে। হয়ত এক সময় দেশের সব পথের কুকুর বিড়ালের মত পশুরা রোগ মুক্ত হয়ে একটা ঘরে ঘর খুঁজে পায় সেটাই হবে অনেক বড় মহৎ একটা কাজ। তাহলে হয়ত এক সময় আমাদের দেশের গৃহে বসবাস করা মানুষ রাস্তা থেকে একজন করে পথকলি শিশুকে নিজের করে নিজের ঘরে নিয়ে যাবে। ষোল কোটি মানুষের দেশে, পৃথিবীর অর্থনীতির লিস্টে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে স্বীকৃত বাংলাদেশে রাস্তায় ঘুমানো সুবিধাবঞ্চিত মাত্র অর্ধ মিলিয়ন শিশু কেন একটা করে ঘর খুঁজে পাবে না? এটা কি হয় নাকি? মানুষ যদি রাস্তার কুকুর বিড়ালের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করতে পারে এত মানবিক হয়ে, একদিন দেশের সব টোকাইরাও এমন সচেতন মানুষদের সহায়তায় সুস্থ, স্বাভাবিক আলোকিত জীবনের সন্ধান পেয়ে যাবে, আমি খুব আশাবাদী।
Test
ReplyDelete