ভোটের আগে ঠান্ডা, ভোটের পরে ডান্ডা

ভোটের আগে ঠান্ডা, ভোটের পরে ডান্ডা

নির্বাচন উপলক্ষে পুরো ইউনিয়নে আনন্দের বন্যা, ব্যবসায়ীদের রমরমা ব্যবসা যেন ঈদের হাট। চা দোকানে গবেষণাধর্মী রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সরগরম আলোচনা সমালোচনা, সাধারণ জনগণ দোকানে নাস্তার বিল-পে করা লাগে না, অটোভাবেই বিলগুলো-পে হয়ে যায়। যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি, মূল ঘটনা এমনি “ভোটের আগে ঠান্ডা, ভোটের পরে ডান্ডা” অর্থ্যাৎ এক বুড়ো কখনো ফিজ-আপ খায়নি, ভোট দিতে যাওয়ার সময় এক প্রার্থী একটি ফিজ-আপ দিয়ে বলল- চাচা, ওমুক মার্কা ভোটটা দিয়েন, বুড়ো মিয়া ফিজ-আপ খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলে। ভোট দিয়ে এসে প্রার্থীর নিকট আবার ফিজ-আপ চাইলে প্রার্থী বলল- চাচা ভোটের আগে ঠান্ডা, ভোটের পরে ডান্ডা।

একজন সাধারণ মেম্বার প্রার্থী হাঁড়ি হাঁড়ি টাকা খরচ করে যাচ্ছেন, যেখানে সে নির্বাচিত হলে তার বেতন ৮০০০/- টাকা। পাঁঁচ বছরে ৪,৮০,০০০/- টাকা সেখানে মেম্বার হওয়ার জন্য সে খরচ করে ১৫/২০ লাখ টাকা। নির্বাচিত হওয়ার পর গরীব দুঃখী, কৃষক শ্রমিক মজুরদের জন্য আসা চাল, গম, আটা, সার ডাকাতি করা ছাড়া কোন গত্যন্তর থাকবেনা। কয়েকদিনের মধ্যেই জনগনের টাকা মেরে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাবে। এটিই হচ্ছে বর্তমান নোংরা নির্বাচনের হলিখেলা আর জনগনও অতীতের কথা স্মরণ রাখতে পারে না। চা বিস্কুট খেয়ে ভুলে যায় অতীতের স্মৃতি নতুন করে কিছু করবে সে ভাবনাও উঠে যায় তার অন্তর থেকে। অথচ, এই ভোটের গুরুত্ব কত বেশী তা যদি সে মানতো তাহলে সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি বয়ে যেত। ভোট একটি আমানত, এই ভোটের ব্যাপারে পরকালে আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে, ভোট মানে সাক্ষ্য প্রদান করা, কাউকে ভোট দেয়া মানে হল তার ব্যাপারে এ সাক্ষ্য প্রদান করা যে, তিনি সৎ যোগ্য। দেশের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা এবং জনগনের অধিকার আদায়ে তিনিই সবচেয়ে উপযুক্ত। প্রার্থী সম্পর্কে জানা শুনার পরেও অসৎ ব্যক্তিকে ভোট দেয়ার কারন, নির্বাচিত হওয়ার পরবর্তী সময়ে যত অসৎ কাজ সম্পাদন করবে সেই পাপের অংশে ভোটাররাও শরীক হবে।

চেয়ারম্যান মেম্বার প্রার্থীগন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গুরে বেড়াচ্ছেন আর লম্বা লম্বা ইশতেহার ঘোষণা দিচ্ছেন এবং সাদা-কালো বা রঙ্গিন পোষ্টার দিচ্ছেন। এক মেম্বার প্রার্থীর নামের শুরুর উপাধী দেখে হাঁসি পেল। সৎ, যোগ্য, নির্ভীক, সাহসী, অন্যায়ের বিরুদ্বে প্রতিবাদী, তারুণ্যের প্রতীক জনাব..... অথচ, এ লোকটি একটি ব্রিকফিল্ডে কাজ করে। পড়ালেখা বলতে কোন রকম আক্ষরিক জ্ঞান। সাধারণ মেম্বার প্রার্থীদের ইশতেহার শুনলে “তুলার বালিশ ফাক হয়ে যায়”। যেখানে খাল নেই সেখানে খাল কেটে কুমির আনার প্রতিশ্রুতি। চেয়ারম্যান মেম্বার প্রার্থীদের দৃষ্টিকর্ষণ করে বলবো- অযথা মিথ্যা ভূলি দিবেন না, এতে আপনার ব্যক্তিগত ইমেজ যতটুকু আছে সেটাও নষ্ট হবে, যা পারবেন তাই প্রতিশ্রুতি দিন। ভোটারদেরকে বলবো- প্রার্থীদের যোগ্যতা যাছাই বাছাই না করে স্বজনপ্রীতিমূলক, সাময়িক সম্পর্ক, সস্তা প্রতিশ্রুতি ও ঘুষ খেয়ে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। জনগনের ন্যায্য অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সৎ, আদর্শবান ও খোদাভীরুর হাতে ক্ষমতা অর্পণ করতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন।

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form