ভেজাইল্লা জাতি

১- পাশাপাশি দুইটি হোটেল। এক হোটেল মালিক জানতে পারলেন, পরোটা নরম করার জন্য ‘সাল্টু’ ব্যবহার করা হয়। হোটেল-রেস্তোরাঁর কর্মীর ভাষায় এর নাম ‘সাল্টু’। অ্যামোনিয়াম সালফেট এবং ইউরিয়া সার একসঙ্গে মিশিয়ে গুঁড়ো করে এই সাল্টু বানানো হয়। তা মানব শরীরের জন্য বিষাক্ত। তিনি পরোটায় সাল্টু ব্যবহার বন্ধ করে দিলেন। সেই থেকে তার পরোটা নরম হচ্ছে না। কাস্টমার যাওয়া বন্ধ করে দিল। এদিকে পাশের দোকানের 'নরম পরোটা'র ডিমান্ড বেড়ে গেল। প্রথম দোকানী তার 'ভুল' বুঝতে পেরেছেন। তিনি বুঝলেন এ জাতি জেনে শুনে বিষ খাবে তবুও বিশুদ্ধ খাবার খাবে না। তিনি আবার পরোটায় সাল্টু দেয়া শুরু করলেন। এক মাসের মধ্যেই তিনি তার হারানো ব্যবসা ফিরে পেলেন!

২- বাজারে দুইটি মুরগির দোকান। দুইজনই ওজনে চুরি করে। এর মধ্যে একজন মুরগী বিক্রেতা ভাবলেন তিনি আর ওজনে চুরি করবেন না। পরদিন তিনি তার মুরগীর দাম বাড়িয়ে দিলেন। কারণ মুরগী ওজনে চুরি না করলে ঐ দামে বেচা যায় না, লস হয়। পাশের দোকানের ফার্মের সাদা মুরগির দাম ১৫০ টাকা আর এই দোকানের সাদা মুরগির দাম ১৭০ টাকা কেজি। দুই দিন পরেই এই মুরগি বিক্রেতার পথে বসার উপক্রম হলো। পাশের দোকানে ২০ টাকা কমে মুরগি বেচলে এমন কোন পাগল আছে যে বেশি দামে মুরগি কিনে? তিন দিনের মাথায় ভাল হয়ে যাওয়া মুরগিওয়ালা তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলেন। তিনি আবার মুরগির ওজন থেকে চুরি করতে লাগলেন। তার ব্যবসা আবারো চাংগা হলো!

৩- পাশাপাশি বেশ কয়েকটা স্ট্রিট ফুডের দোকান। সব দোকানেই ভাজা পোড়া আইটেম বিক্রি হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভয়ে এক বিক্রেতা সিংগাড়া সমুচায় পোড়া মবিল ব্যবহার করা বন্ধ করে দিয়েছে। তার সিংগাড়া সমুচা বিক্রি কমে গেল। কড়াই থেকে নামানোর আধা ঘন্টা পরেই সব 'পোতায়ে' যায়। আর অন্য দোকানে পোড়া মবিলে ভাজা সিংগাড়া সমুচা সারাদিনেও মচমচে থাকে। এই দোকানের মালিক সিদ্ধান্ত নিলেন পাবলিককে আর বিশুদ্ধ খাবার খাওয়াবে না। আমরা যেই জাতি আমাদের খাবার দাবার হওয়া উচিৎ ভেজাইল্লা!

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form