একাল সেকাল

আমাদের সময় আমরা যখন হেটে যাইতাম স্কুলে,
তোমাদের সময় তোমরা এখন যাতায়াত কর সাইকেলে।
কেরোসিন তেলে লন্ঠন জ্বেলে করিতাম পড়াশোনা,
তোমরা এখন লন্ঠন কি? এই নামটাই জাননা।
গরমকালে তালপাতার পাখার শীতল পরশ পেয়ে,
রাজ রাজাদের কাহিনী শুনে পড়তাম ঘুমিয়ে।
তোমরা এখন আরাম পেতে চালাও বৈদ্যুতিক পাখা,
বুঝলে না তো তালের পাখায় ছিল কত মমতা মাখা।
কতটা মমতায় বাড়ির বড়রা শুনাতো রূপকথা,
এক বিছানাতে সবাই শুইতাম একই সূতায় যেন গাথা।
পাখির ডাকে উঠিতাম জেগে কাক ডাকা ভোর হলে,
আঁচল ভরিয়া কুড়াইতাম কদম ফুল শেফালী তলে।
তোমরা এখন সকাল চিন না দেখোনি সূর্যোদয়,
দেখিবে কেমনে-তোমাদের সকাল দশটায় শুরু হয়।
বন্ধুবান্ধব নেই তোমাদের সব কেড়েছে নেটে,
বিশ্ব এনেছ হাতের মুঠোয় ছোট্ট মোবাইল ঘেটে।
প্রকৃতিকে তোমরা দূরে ঠেলেছ নিজেকে বেঁধেছ ঘরে,
বাস্তব টাকে দূরে ঠেলে দিয়েছ শুধু অবাস্তবের তরে।
কীর্তন গান, পালা গান, যাত্রা পালা- জান কি এর কিছু?
আমাদের সময় আমরা সবাই ছুটতাম এর পিছু পিছু।
চৈত্র মাসে মলাইশের শ্মশানে হইত বিশাল মেলা,
দিনে বেলায় হইত সেথায় মজার সার্কাস খেলা।
কোনটাই এর বাদ যেত না বন্ধু-বান্ধব নিয়ে,
কত যে মজা করেছি আমরা দিয়েছি পুতুলের বিয়ে।
তোমাদের মজা বন্দী আজিকে ছোট্ট মোবাইল মাঝে,
কি যে মজা আছে ঐ মোবাইলে কিছুই বুঝি না যে।

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form