গরু গোয়ালপালিত পশু

গরু খুব শান্ত-শিষ্ট, নিরীহ (গুতা খাইলে বুঝবেন কেমন নিরীহ) একটি গোয়ালপালিত পশু। তবে গোয়াল না থাকলে বাইরে খুঁটিতেও বেঁধে রাখা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে চুরি হওয়া কিংবা দড়ি ছিঁড়ে চম্পট দেওয়া সংক্রান্ত যাবতীয় দায়-দায়িত্ব যার গরু তার। গরুর চারটি ঠ্যাং, দুইটা চোখ, দুইটা কান, একটা নাক, একটা মুখ এবং মাছি খেদানোর জন্য একটা ল্যাঞ্জা, গরুর পা আছে ঠিক, কিন্তু তাদের সম্প্রদায়ে জুতা পরার সিস্টেম চালু না থাকায় এ পর্যন্ত কোনো গরুকেই কখনো জুতা পরতে দেখা যায় না। এরা জুতা পরলে অবশ্য জুতার ক্ষেত্রে ‘‘জোড়া’’ শব্দটি চালু না হয়ে ‘‘হালি’’ শব্দটি চালু হতে পারত। গরুর দুটি শিং রয়েছে। এই শিং নামক দুটি অস্ত্র রাখার দায়ে কোনো গরুকে এ পর্যন্ত জেলহাজত কিংবা অন্য কোনো শাস্তির মুখোমুখি হতে শোনা যায়নি। গরুর বিশাল একটি মাথা রয়েছে। মাথার ওপর হালকা চুল থাকলেও বড় কোনো চুল নেই, কারণ গরুরা ইচ্ছে করেই চুল বড় করে না। আর বড় করে না এই জন্য, যেহেতু বাজারে এখনো তাদের চুলের যত্নের কোনো শ্যাম্পু কেনাবেচা হয় না। গরুর মেগা সাইজের একটা ভুঁড়ি আছে। এই ভুঁড়ি কমাতে তারা কোনো যানবাহনে না চড়ে হেঁটে যাতায়াত করে। গরু তাদের মাথায় লম্বা চুল না রাখলেও লেজের মাথায় লম্বা কতগুলো চুল রাখে, যাতে মশা-মাছি গায়ে বসা মাত্র কষিয়ে বাড়ি মারতে পারে। মেয়ে গরুকে গরু সম্প্রদায়ের পরিভাষায় বলা হয় ‘‘গাই’’। তাদের নামে বাংলাদেশের একটা জেলারও নামকরণ করা হয়েছে, গাইবান্ধা। টিসু কিংবা রুমাল না থাকায় গরুরা মন খুলে কাঁদতে পারে না। গরু আমাদের চারপাশের ঘাস, লতাপাতা খেতে গিয়ে শাকসবজিও খেয়ে ফেলে। ফলে আমাদের বাড়িতে কেউ শাক রান্না করতে চাইলেও করতে পারেন না। গরু নামে পৃথিবীতে একটা প্রাণী আছে বলেই, শিক্ষকেরা আমাদের গরু বলে সম্বোধন করেন। যা অতিশয় মর্মবেদনাদায়ক। গরু খানিকটা বেয়াদব কিসিমের প্রাণী। কারণ সে কোনো রকম আদব-কায়দার ধার না। মাঝেমধ্যে এমন জোরে লাথি মারে যে, নিজেকে তখন মনে হয় ফুটবলজাতীয় একটা কিছু। বিষয়টা একটু লজ্জাকর বৈকি।
গরু গোয়ালপালিত পশু cows | আমির হোসেন

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form