আল্লাহর অ‌স্তিত্ব প্রমাণ

আর‌বের মহা প‌বিত্র মক্কা নগরী‌তে, জ‌নৈক আল্লার ওলী এক‌দিন ধ্যানমগ্ন থাকা অবস্থায় একজন বেদুইন নাসারা তাঁর নিকট এ‌সে চিৎকার ক‌রে বল‌তে লাগ‌লেন। ও‌হে আল্লাহর দর‌বেশ আপ‌নি যদি আমার চার‌টি প্র‌শ্নের উত্তর দি‌তে না পা‌রেন তাহ‌লে, আপনা‌কে আমি হত্যা ক‌রে ফেলব। তি‌নি অ‌নেক বার চিৎকার ক‌রে বল‌েছি‌লেন কিন্তু তি‌নি কর্ণপাত ক‌রেন‌নি। অ‌গ্নিমূ‌র্তি ধারন ক‌রে খোলা তরবা‌রি হা‌তে লোক‌টি বলল- আমি ৪টি প্রশ্ন কর‌ছি উত্তর না দি‌লে আপনাকে এই অবস্থায় হত্যা করবঃ-

১। আল্লাহ য‌দি সবস্থা‌নে থা‌কেন তাহ‌লে তাঁ‌কে আমরা দেখিনা কে‌নো?

২। না দে‌খে উনা‌কে কে‌নো বিশ্বাস কর‌তে
বলা হয়?

৩। ইব‌লিশ ও‌ জিন জা‌তি আগু‌নের তৈ‌রি হ‌লে আগুন কিভা‌বে শা‌স্তি দি‌বে?

৪। আল্লাহর বিনা আদে‌শে গা‌ছের পাতাও য‌দি না ন‌ড়ে তাহ‌লে আমরা যা ক‌রি আল্লাহ সব জা‌নেন। ত‌বে আল্লাহ কে‌নো আমা‌দের শা‌স্তি দিবেন?

রা‌গের অ‌গ্নি‌গি‌রি‌তে ফে‌টে পড়া লোক‌টি শেষ বা‌রের ম‌তো বলল- ও‌হে নিরুত্তর দর‌বেশ, এখনই মৃত্যুর দে‌শে চ‌লে যান। ব‌লেই তরবারী গর্দা‌নে ব‌সি‌য়ে দি‌বেন, ঠিক তখনই দর‌বেশ মা‌টির একটুক‌রো ঢিল ছুঁ‌ড়ে মার‌লেন। লোক‌টি আহত হ‌লো, ব্যাথা পে‌লো, মা‌টি‌তে প‌ড়ে গে‌ল। লোক‌টি ব্যাথার কার‌ণে হাত দি‌য়ে তরবারী পর্যন্ত ধর‌তে না পে‌রে, রা‌গে দুঃ‌খে ক্ষো‌ভে বাদশাহর কা‌ছে না‌লিশ দিল। বাদশাহ দর‌বেশ‌কে বন্দী ক‌রে আনার জন্য নি‌র্দেশ দি‌লেন। দর‌বেশ বলল- আমি আল্লাহর নি‌র্দেশ ছাড়া কোথাও যায় না। আমি বাদশার কা‌ছে কোন অপরাধ ক‌রিনি। দরকার হ‌লে বাদশা আমা‌র কা‌ছে আস‌বেন। বাদশা‌র হুকুম ম‌তো দর‌বে‌শকে বন্দী ক‌রে রাজ প্রাসা‌দে নি‌য়ে আসা হ‌লো। অ‌ভিযুক্ত দর‌বেশ বলল- আমার ধ্যানমগ্নতা বিঘ্ন ঘটা‌নোর বিচার আগে করুণ। লোক‌টি বলল- আমি ভদ্রভা‌বে উনার নিকট জান‌তে চে‌য়ে‌ছি। তারপ‌রেও আমি ক্ষমা চা‌চ্ছি। দর‌বেশ বলল- আমি তো তার প্রশ্নের উত্তর দি‌য়ে‌ছি।

১। উনার প্রথম প্রশ্ন ম‌তে, ব্যা‌থা‌কে দেখা না‌ গে‌লেও ব্যাথার অ‌স্তিত্ব অনুভব করা যায়। সুতরাং স্রষ্টা‌কে চর্ম‌চো‌খে দেখা যায়না।

‌ ২। উনার দ্বিতীয় প্রশ্ন ম‌তে, ব্যাথা দেখ‌তে চাই‌লে দেখা‌নো সম্ভব না। কিন্তু বাস্তব বিশ্বাস হ‌লো ব্যাথা আছে, সেটা মান‌তে হ‌বে। তাহ‌লে স্রষ্টা‌কে না ‌দে‌খে বিশ্বাস কর‌তে হ‌বে, যেমন ব্যাথা না দে‌খে বিশ্বাস কর‌তে হয়।

৩। উনার তৃতীয় প্রশ্ন ম‌তে, মা‌টির ঢিল মা‌টির তৈ‌রি মানুষ‌কে য‌দি আঘাত কর‌তে পা‌রে বা শা‌স্তি দি‌তে পা‌রে, তাহ‌লে আগুন দি‌য়ে আগু‌নের তৈ‌রি ইব‌লিস ও জিন‌দের শা‌স্তি দেওয়া অসম্ভব না।

৪। চতুর্থ প্রশ্ন ম‌তে, সবই য‌দি সৃ‌ষ্টিকর্তার নি‌দে‌র্শে হ‌য়ে থা‌কে, তাহ‌লে উ‌নি কেন? বিচার চাই‌তে আপনার কা‌ছে এ‌সে‌ছেন।

লোক‌টি সব শু‌নে কাঁদ‌তে লাগ‌লেন আর বল‌লেন- আল্লাহর অ‌স্তিত্ব প্রমাণ, এর চে‌য়ে ভা‌লো যু‌ক্তি আর কিছু হ‌তে পা‌রে না।

আধু‌নিক চলমান বি‌শ্বে এখনো স‌ন্দেহ আছে লু‌কি‌য়ে, ভাব‌তে বড়ই অবাক লা‌গে।

স্ত্রী স‌ন্দেহ ক‌রে স্বামীকে, স্বামী স‌ন্দেহ ক‌রে স্ত্রী‌কে।
অথচ তারাই না‌কি ক‌রে‌ছিল বি‌য়ে, গভ‌ীর ভা‌লোবাসার বিশ্বা‌সে।

সন্তান ফে‌টে প‌ড়ে ক্রো‌ধে, মা‌য়ের সম্প‌র্কে কুৎসা কেউ রটা‌লে। প্র‌তিবা‌দে জ্বলে উ‌ঠে বিদ্যুত বে‌গে। চিৎকার ক‌রে বিশ্ব কাঁপি‌য়ে ব‌লে- তু‌মি কি হও‌নি কোন নারীর গ‌র্ভে ?

‌প্রে‌মিকা স‌ন্দেহ ক‌রে প্রে‌মিক‌কে, প্রে‌মিক স‌ন্দেহ ক‌রে প্রে‌মিকা‌কে। অথচ তারাই না‌কি ভা‌লো‌বে‌সে ছিল, হিমাল‌য়ের ম‌তো অটল বিশ্বা‌সে।

মা‌য়েরা ভা‌বে মে‌য়েরা ক‌লেজ-বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ে কি ক‌রে? স‌ন্দে‌হের দোলায় মন‌টি অাচমকা দু‌লে উ‌ঠে। হাত হ‌তে গ্লাস‌টি প‌ড়ে যায় ভে‌ঙ্গে, স‌ন্দেহ‌টি গভীর হ‌য়ে বাসা বাঁ‌ধে হৃদ‌য়ে।

মা‌য়ের চে‌য়ে মাসীর ব্যাথ‌া আগে, নাতনীর প্র‌তি নানীর- তাই‌তো স‌ন্দেহ জা‌গে। খালা এসে যা খু‌শি তাই ব‌লে ফে‌লে, নি‌জে‌কে শোধরা‌নোর কথা না ভে‌বে।

অ‌ভিসা‌রিনী স‌ন্দেহ ক‌রে পরকীয়া‌কে, পর‌কীয়া স‌ন্দেহ ক‌রে অ‌ভিসা‌রিনী‌কে। অথচ তারা ভা‌বে না একবারও,
তারাই হ‌লো নারী জা‌তির কলঙ্ক।

তাই‌তো বলি আধু‌নিক চলমান বি‌শ্বে, স‌ন্দেহ এখ‌নো আছে লু‌কি‌য়ে আছে, ভাব‌তে বড়ই অবাক লা‌গে।

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form