জন্ম থেকেই বাশঁ

জন্মেছিলাম যেদিন আমি তখন ছিলো শীত,
বাঁশের আগুন জ্বেলে তখন দাদী গাইলো গীত।
হাঁটতে প্রথম শিখেছিলাম বাঁশটা ধরে ধরে,
বাঁশ ছিলো তাই অভয় ছিলো যাইনি আমি পরে।

শৈশবকালের বাঁশ.....
বাঁশের বাঁশি বাজাতাম যখন নদীর ধারে বসে,
বাঁশির সুরে লাইলি হয়ে হাসি বসলো পাশে।
বাঁশ বাগানে ঝোপের আড়ে গল্প জমে বেশ,
দিন গড়িয়ে রাত্রি হয় বাঁশির থাকে রেশ।

বিপদজনক বাঁশ.....
সুজন মাঝি আমার চেয়ে মধুর বাজায় বাঁশের বাঁশি,
তাইনা শুনে বাঁশটা দিয়ে ছেড়ে গেলো হাসি।

নির্বাচনের বাঁশ.....
নির্বাচনে জেতার আগে নিজ খরচে কাকু,
খালের উপর শক্ত করে দিলো বাঁশের সাঁকো।
তাইনা দেখে গ্রামের মানুষ কাকুকে দেয় ভোট,
ক'দিন পরে টের পাইলাম বাঁশের কি যে চোট।

অপকারি বাঁশ.....
কাকু আজো বাঁশের প্রেম ভুলতে পারে নাই,
নদীর উপর ব্রিজ বানাতে বাঁশ দিয়েছে তাই।
কাকু এবার বাঁশ দিয়েছে বহুতল দালানে,
কোটি টাকা মাইরা দিছে বাঁশ দিয়ে চালানে।
ফ্লাইওভার আর বড় সেতু আছে বাঁশের রেশ,
জনগন তাই বাঁশ খাইয়া বলছে- এ যে আজব দেশ।

জনসভায় বাঁশ.....
নেতা সাহেব এসে গেছে করবে সভা তাই,
শক্ত করে বাঁশ দিয়ে বড় একখান গেট বানাই।
বাঁশের গেটে মুগ্ধ হয়ে নেতা সাহেব কয়,
তোমরা থাকলে আমার নেই কোন ভয়।
ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দুই গ্রুপে তুমুল মারামারি,
একের চেয়ার অন্যে কেড়ে মাথায় দিলো বারী।
গেট ভেঙে বাঁশ আনলাে কি যে আজব কারখানা,
বাঁশের চোটে মাথা ফাটে নেতাকে ও মানে না।

বিয়েবাড়িতে বাঁশ.....
নতুন জামাই আসবে বলে বিশাল একখান বাঁশের গেট,
বাঁশে লাকড়ির রান্না ছিলো খেলাম ভরে পেট।
পেট ভরিলাম ঠিকি আমি পকেট হলো ফাঁকা,
মনে মনে ভাবছি বসে বাঁশ ছিলো কি বাঁকা?
বিয়ের পড়েও বাঁশের ঝাড়ু বউকে ছাড়ে না,
সারা জীবন বাঁশের কাব্যে জ্বরে পুড়ে গা।

আজব বাঁশ.....
হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা হাতে নিয়ে বাঁশের বাঁশি।
ইঁদুর সব দেয় তাড়িয়ে সবার মুখে ফুটে হাসিঁ।
ইঁদুর গেল বাঁশির সুরে শহর ছেড়ে অনেক দূরে যায়,
হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা শত মূদ্রার আবেদন জানায়।
না পেয়ে তার পারিশ্রমিক বাঁশ নিয়ে নিজের ঘাড়ে,
উল্টা বাঁশির সুরে দেখো সকল শিশু শহর ছাড়ে।

কুদরতি বাঁশ.....
মরন কালে বাঁশের খাটে,
বিনা রশি বাঁধা পাটে।
চার কোনাতে চারজনাতে রেখে আসবে কবরে,
বাঁশ নিয়েই চলে যাব শেষ বিদায়ের পরপারে।
বৃদ্ধ বেলায় বাঁশের লাঠি হাঁটতে হবে বাঁশের ভরে,
হিন্দু হলে বাঁশের আগুন জ্বলবে চিতায় মরনের পরে।

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form