শ্বাশুড়ির কথায় বিছানা ছেড়ে ওঠার চেষ্টা করলাম। উঠে বসতেই শরীর খুবই দুর্বলতায় চারদিক অন্ধকার হয়ে আসলো। খাটের পায়া চেপে ধরে বসে রইলাম। শ্বাশুড়ির আবারো কর্কষ স্বরে ভেসে এলো- "এতো বেলা পর্যন্ত শুয়ে থাকলে হবে?"। ঘরের দেয়াল ধরে ওঠে শ্বাশুড়ি মাকে বললাম- "আমার শরীরটা খারাপ লাগছে, তাই শুয়ে ছিলাম।" রান্নাবান্না করবে না? অসুস্থ হয়ে শুয়ে থাকলে তো চলবে না। সংসার সামলাতে হবে। ছেলেটা ফিরে এসে না খেয়ে থাকবে? "মা আমি রান্নাঘরে যাচ্ছি। ঠিকি তো, আমার সংসার আমাকেই তো সামলাতে হবে।" রান্নাঘরে গিয়ে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে রইলাম। শ্বাশুড়ি মায়ের কন্ঠেস্বর ভেসে এলো- "বউমা, একটু চা দাও তো"। চায়ের পাতিল চুলায় তুলে দিতেই মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠলো। তবুও নিজেকে সামলিয়ে আগুনের সামনে দাঁড়িয়ে রান্না করলাম। বিকেলে ভিষণ অসুস্থ হয়ে পড়লাম। গা পুড়ে যাচ্ছে জ্বরে। স্বামী ফিরে এসে বললো- "এই অসময়ে শুয়ে আছো কেন?" কাঁপা স্বরে বললাম- "জ্বর এসেছে বোধহয়। কপালে হাত দিয়ে দেখো তো"। স্বামী শার্ট খুলতে খুলতে বললো- "কপালে হাত দিয়ে দেখার কি আছে। জ্বর হলে তো বোঝাই যায় "। রাত হতে হতে আরো অসুস্থ হয়ে পড়লাম। সন্ধায় প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খেয়েও কোনো কাজ হলো না। শ্বাশুড়ি মা ঘরে এলে স্বামী বললো- "ওর তো খুব জ্বর, ওর বাড়িতে ফোন করে বল তাদের মেয়ে অসুস্থ। ওর মাকে আসতে বল, মেয়েকে নিয়ে যেতে।
মনে মনে ভাবলাম, শ্বাশুড়ি, স্বামীর সামান্য অসুস্থ হলে আমার রাতের ঘুম উড়ে যেত। সেবা যত্ন করে সুস্থ করে তুলতাম। আর আজ আমি অসুস্থ, চিকিৎসা করার জন্য আমার বাবার বাড়ী যেতে বলা হলো।