ইদানিং সাহসে কুলায় না খরচ বাড়াতে

ইদানিং সাহসে কুলায় না খরচ বাড়াতে

আজ হোটেলে দুপুরের খাবার খেলাম। অর্ধেক ডিম, আলুভর্তা আর একটু পাতলা ডাল। পঞ্চাশ টাকা বিল এলো। বলা যায় অনেকদিন পর দুপুরে খেলাম। মাথার উপর দাঁড়িয়ে থাকে ওয়েটার। তাকেও বখসিশ দিতে হয়। পাঁচ টাকা তো দেয়া যায় না। ওয়েটারকে বলতে পারলাম না আরেক প্লেট ভাত দিন। তার কাজ বাড়ানো মানে বখসিশ দেয়ার রাস্তা বের হওয়া, খেয়ে উঠে এলাম। ইদানিং সাহসে কুলায় না খরচ বাড়াতে...

বিকেলের নাস্তা বাদ দিয়েছি। জিহবা বড্ড ত্যাদর, রুচি বাড়ছে। মিষ্টি টাইপের কিছু খেলে বলে ঝাল খাবা না? ইদানিং সাহসে কুলায় না খরচ বাড়াতে...

সদাইপাতি কিনতে গেলে দোকানী টুকটাক বেশি দিয়ে দেয়। দেখা গেল পয়তাল্লিশ টাকা বিল হলো। বলে বসে মামা পঞ্চাশ টাকার মিলায় দেই। এসব ঝানাইপানাই যেন না করে তাই আগেই বলে দেই, খবরদার বেশি দেবেন না। পারলে একটু কম দেবেন। ইদানিং সাহসে কুলায় না খরচ বাড়াতে...

চা খেতে গেলে বিপদ। দোকানী বড্ড ফাজিল। এত সুন্দর করে দুধ চা বানায়, মনে হয় একটু পরপর খাই। কেন এতো সুন্দর টেস্ট করে বানাবি তুই বেটা!

পাঁচ টাকার চা পনের টাকা। খাবোই না আর চা। ইদানিং সাহসে কুলায় না খরচ বাড়াতে...

মাছের বাজারে গরিবের মাছগুলোও আর কেনা যায় না। পিচ পিচ করা মাছ খুঁজি আজকাল। সেখানেও ভিড়, মিন মিন করে বলি- একটা ছোট্ট সাইজের মাছ দ্যান না! একা মানুষ এতো বড় দিয়েন না। ইদানিং সাহসে কুলায় না খরচ বাড়াতে...

মেহমান বেড়াতে এলে গল্প মুখস্ত করি। আপনাদের খুব দেখতে ইচ্ছে করে। ইশ, আসতে বলতে পারি না। একটা কাজে বাইরে যাচ্ছি কদিনের জন্য। মেহমান নিজেই বলে- ঠিক আছে কদিন পরে যাবো। তখন মনে হয় হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। কায়দা করে যে কয়দিন চলা যায় আরকি। ইদানিং সাহসে কুলায় না খরচ বাড়াতে...

এই গরমে জামা কাপড় কিনে হবে কি? এমনতো না কোনো অনুষ্ঠানে যাবো। নিজেকে বুঝ দেই- যা আছে তাই দিয়েই চলো। পোষাকে পরিচয় নয়, নীতিবাক্য নিজেকে শুনাই। কারণ, ইদানিং সাহসে কুলায় না খরচ বাড়াতে...

দেশের উন্নয়ন হোক, ধনীগুলো আরো ধনী হোক। আর আমরা না হয় কৌশল করেই বাঁচি নিজেকে সবকিছু থেকে বঞ্চিত করে। এই গল্প হাজার মানুষের।

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form