জীবনটা কচুপাতার পানির মত, একটু নাড়া খেলেই পড়ে যায়। কেউ বলে জীবন এখানেই শেষ। কেউ বলে এরপর আছে পরকাল, যাতে এ জীবনের কর্মফল ভোগ করতে হয়। দু’টি বিশ্বাসের একটি অবশ্যই সঠিক। মানুষ পারিবারিক ভাবে সঠিক বিশ্বাসের পরিবারে জন্মগ্রহণ করে তারা ভাগ্যবান। আর যারা সঠিক বিশ্বাস খুঁজে পেয়ে সেভাবে জীবন যাপন করে এবং ভুল বিশ্বাস পরিত্যাগ করে তারাও ভাগ্যবান। অগোচরে ভুল বিশ্বাসে থেকে যাওয়া অথবা সঠিক বিশ্বাস গ্রহণ করতে না পারা থেকে আত্মরক্ষা করতে সত্য অনুসন্ধান করে, এরা বুদ্ধিমান।
কিছু বেকুব পারিবারিক ভাবে বিভিন্ন বিশ্বাসের অনুসারী হয়। তো পারিবারিক ভাবে বিভিন্ন বিশ্বাসের অনুসারি হয় বলে সঠিক বিশ্বাস খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হবেনা, সেটা আবার কেমন কথা? কেউ বলে- এটা তার দোষ নয়, যে ভুল বিশ্বাসের পরিবারে জন্মের কারনে সে ভুল বিশ্বাসের অনুসারী হয়েছে। কিন্তু দোষ নয় বলে কি ভুল বিশ্বাসের ক্ষতি থেকে রেহাই পাওয়া যাবে? কেউ বলে- এটা কারো গুণ নয়, যে ঠিক বিশ্বাসের পরিবারে জন্মগ্রহণ করার কারণে কেউ ঠিক বিশ্বাসের অনুসারী হয়েছে। কিন্তু গুণ না হলেও কি সে ঠিক বিশ্বাসের উপকার থেকে বঞ্চিত হবে? এখন বিধাতা কাকে কোন পরিবারে জন্মের ব্যবস্থা কেন করেছেন, সেটা না হয় তাঁকে কাছে পেলে জিজ্ঞেস করে নেওয়া যাবে। বিধাতাকে কাছে না পাওয়া পর্যন্ত যাতে নিজের ভাল হয়, সে চেষ্টা করি!
কোরআন পরকালের কথা বলেছে। আর বলেছে কোরআনে ভুল নেই। আর মানুষ দেড় হাজার বছরেও কোরআনের ভুল শনাক্ত করতে পারেনি। মানুষের ভুল আছে, কাজেই কোরআনের কথা মানুষের কথা নয়। কোরআন এমন কারো কথা যার ভুল নেই। যারা মধ্যে তথ্য, জ্ঞান, বিবেক ও বুদ্ধিগত ঘাটতি আছে তার ভুলও আছে। কারণ যে বিষয়ে যার জ্ঞান নেই সে বিষয়ে সে সঠিকটা কিভাবে বলবে? সেতো সেটা জানেইনা। সংগত কারণে ঘাটতি থাকলে ভুল থাকবেই। সসীমের মধ্যে ঘাটতি থাকবেই। কারণ সীমার বাইরে তাতে কিছু থাকা সম্ভব নয়। ঘাটতি থাকবেনা শুধু অসীমে। যতই খরচ হয় তথাপি অসীমে ঘাটতি তৈরী হয়না। সংগত কারণে ঘাঠতি না থাকায় অসীমের ভুল নেই। অসীম একাধিক হতে পারেনা। কারণ একাধিক করতে অসীমে সীমা দিতে হয়। আর সীমা দিলে অসীম আর অসীম থাকেনা, সসীম হয়ে যায়। কাজেই অসীম একাধিক হওয়া অসম্ভব। সুতরাং অসীম শুধুই একজন, যার ভুল নেই। যার মানব প্রদত্ত ও আত্মস্বীকৃত নাম আল্লাহ।
সংগত কারণে ভুল না থাকায় কোরআন অসীম বা আল্লাহর বাণী এবং কোরআনের কথা অবশ্য সঠিক। সেই কোরআন যখন বলেছে- পরকাল আছে সুতরাং পরকাল অবশ্যই আছে। এটাই আমার পরকাল বিশ্বাসের একমাত্র কারণ। আর পরকাল সম্পর্কে কোরআন যেমন যা বলেছে- আমার বিশ্বাসও হুবহু সে রকম।
কচুপাতার পানির মত কখন জীবনটা গড়িয়ে পড়ে, সেজন্য বেঁচে থাকতে পরকালের চিন্তা করি- যেন সে কালে একটু শান্তিতে থাকা যায়।