শহরে কিছু অবহেলিত কাকের বসবাস। নিতান্তই যাদের কুৎসিত চেহারা আর কর্কশ ডাকের জন্য। সবচাইতে অবহেলিত এই পাখিগুলো মানুষের গালাগালি সহ্য করে শহরের বজ্র গুলো পরিষ্কার করাই যাদের একমাত্র লক্ষ। আমরা ভুলে যাই তারা আমাদের সোসাইটির একটা অংশ। তারাও যে পাখি আমরা সে অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছি। একবার ভাবুন তো এই অতিকায় কুৎসিত পাখি গুলো যারা সমাজে সবচাইতে অবহেলিত তারা যদি তাদের পাখি অধিকার ফিরে পাবার জন্য আন্দোলন করে? যদি বিদ্রোহ করে বসে! তাদের কালো কুৎসিত ঠোঁটটাকে যদি ব্যাবহার করে সবচাইতে শক্ত মরনাস্ত্র হিসেবে, আর আক্রমণ করে পৃথিবীর সবচাইতে শ্রদ্ধাশীল মানুষ জাতির ওপরে তবে বিষয়টা কি নিতান্তই ভালো দেখাবে?
যুদ্ধে কাক জাতির ওপরে মানুষের তৈরি মেশিনগানের কাছে তাদের কালো কুৎসিত ঠোঁট গুলো হয়তো অকেজো। যুদ্ধ শেষে হয়তো মানুষের জয় হবে। এ পৃথিবী জুড়ে আর একটা কাক ও থাকবেনা। পৃথিবী হবে কাক শুণ্য। শোনা যাবেনা কর্কশ শব্দ। ইতিহাসে লেখা থাকবে মানুষ কাকের যুদ্ধ বাচ্চারা মিউজিয়ামে যাবে কাকের স্ট্যাচু দেখতে। হয়তো কাকহীন একটা ভোর হবে পৃথিবীতে। কিছুদিন পরে হয়তো পেপারে লেখা উঠবে উচ্ছিষ্টতে ভরে গেছে শহর। গন্ধে বিলুপ্ত প্রায় মানব জীবন। তবুও একদল বলবে পাখি দাবি না করলে হয়তো কিছু কাককে বাঁচিয়ে রাখতাম। কিছু কাল পরে পৃথিবী হবে কাক শুণ্য এক নর্দমাময়ম গন্ধ যেখানে হবে মানুষের জীবন সাথি। হয়তো সেদিন স্বর্গীয় কাক গুলো ঠাট্টা করে কা কা করতে করে উড়ে বেড়াবে মানুষের চোখের অন্তরালে। মানুষ কাককে প্রিয় করতে চেয়েও একটা কাকের অভাব পুরণ করতে পারবেনা। ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ কা কা শব্দে মোর্ছা ভেঙে নয়ন দেখে তার'ই বারান্দা থেকে কিছু উচ্ছিষ্ট নিয়ে গাছের ওপর দিয়ে কয়েকটা কাক একটা গাছে গিয়ে বসে মহা আনন্দে কা কা করছে। আর নয়ন হাসে আর বলে এই পাখিগুলো আমাদের সমাজের অংশীদার।