এক দেশের বুলি, অন্য দেশের গালি

সিলেটি মেয়ে বিয়ের পর ভাবীকে কইলেন, তোমার ভিসা আনতে ঢাকা যাইতে হবে। আমরা কালই রওয়ানা দিব। ভাবী কইলেন- বিছা আনতে ঢাকা যাইতে হবে কেন? কত বিছা পইরা আছে গাছের নিচে! ভাই কইলেন এই ভিসা গাছের নিচের ভিসা না। একটু উপর লেভেলের ভিসা, তাই আনতে ঢাকা যাইতে হবে।

পরদিন ফজরের পরই রওয়ানা দিলেন। ঢাকা পৌঁছেই দুপুরের খাবার খাইতে দুইজনে রেস্টুরেন্টে বসেছেন। ওয়েটার এসেছে অর্ডার নিতে।
ভাই কইলেন- কি কি আছে?
ওয়েটার কইলো- রুই, পাবদা, চিংড়ি, শিং, টাকি ভর্তা আরও আছে।
ভাবি কইলেন- রউ, ফাইব্বা, এইছা, হিঙ্গি, খাংলা, ছেং এইসব নাই?
ওয়েটার কইলো- লাটি আছে খাইবেন?
ভাবী কইলেন- দেখনি বে! হারামজাদা চ্যাঙর ফনা খত বড় খতা খয়! উফুত করলে মার দুধ নাখেদি বাইয়া বুকুত ফরবো, আর হে খয় লাটি খাইতায় নি! লাটি ভাইঙ্গা তর খম্বলেদি বরিদিমুরে হারামজাদা!

এই রেস্টুরেন্টে আর খাওয়া হল না। অন্য এক রেস্টুরেন্টে বিরয়ানী খেয়ে তারপর কিছু সপিং করতে বেড় হইলেন। এক কম্বলের দোকানের সামনে গিয়ে দাড়ালেন। ভিতর থেকে এক সেলস গার্ল যেই কইছে স্যার কম্বল দেখবেন, কম্বল? ভিতরে আসেন দেখাই। পিছন থেকে ভাবী কইলেন- ছিঃ বেশরম মাইয়া, ঘরে বাপ ভাই নাই। তারপর ভাইকে ভাবী কইলেন- তুমি চল আমার সাথে আইজ তোমারে! (ভাবী কম্বল কে খম্বল = পাছা/পশ্চাদ্দেশ, মনে করিয়া রেগে গিয়ে ছিলেন)। কথায় আছে না- এক দেশের বুলি, অন্য দেশের গালি।

পরদিন বৃটিশ হাইকমিশন উঠার পর ইন্টার্ভিউ শুরু করলেন।
অফিসার- আপনার স্বামীর নাম?
ভাবী- বাংলা না আংরেজী?
অফিসার- তায়াজ্জুব ব্যাপার! আপনার স্বামীর আংরেজী নামও আছে নাকি?
ভাবী- আছে আছে। আমার সোয়ামির আরবী নামও আছে।
অফিসার- ভেরী ইন্টারেস্টিং! একটু খুইলা বলেন তো শুনি।
ভাবী- Fast অর্থাৎ পরথম নাম এক্কারে সহজ। আমরা কই না নাক বরাবর সোজা, আর সোজার আংরেজী হইলো গিয়া Straight! যেমন আমরা কইনা Straight four ward! আর Last অর্থাৎ শেষ নাম এর পর আর কোন নাম রাখা হবে না। এমনিতেই দুইবার রাখা হয়ে গেছে। কতবার আকিকা দিবে বলেন? তাছাড়া একজনেই যদি ৪/৫ টা নাম রাইখা ফালায় তাইলে নামের অভাব দেখা দিবে না?
অফিসার- ঠিকই কইছেন! এইবার উনার আরবী নামটাও কইয়া ফালান।
ভাবী- উনার লাস্ট নামটাই আরবী নাম। মুসলমানের নামে আরবী না থাকলে কি হয়? বলুন!
অফিসার- জ্বি, ঠিকই কইছেন। তো নামটা কি একটু কৃপা করে বলবেন?
ভাবী- কইতাছি, কইতাছি, একটু দম নিতে দিন। আমার সোয়ামীর লাস্ট নাম হইলো গিয়া মিয়া। যার আরবী তরজমা করলে গিয়া হয় একশ। মানুষ হুদাই কয় লাল একলা একশ, আসলে আমার সোয়ামী হইলেন গিয়া একলা একশ।
অফিসার- আচ্ছা নাম তো জানলাম।এইবার কাম সম্পর্কেও একটু বলে দিন।উনার পেশা কি কোথায় থাকেন?
ভাবী- উনি দেশে আসলে থাকেন আংরেজীতে বলে washington আর বাংলাতে ধোপা দীঘির পাঁড়। পেশায় উনি একজন বেকার, থাকেন কালা দুনিয়া রোড।
অফিসার- বুচ্চি, কালা দুনিয়া রোড! উনি কালা দুনিয়া অথবা দলা দুনিয়া যেখানেই থাকেন না কেন, বেকার হইলে তো চলবে না। আপনাকে নিয়া খাওয়াবেন কি? আর পরাবেন কি? কাম কাজ না দেখালে তো আপনার ভিসা হবে না।
ভাবী- কিতা যে কইন আপনে। আমি হক্কল খাগজ ফত্র লয়া আইছি। হুনছি আমার তাইন দিন রাইত আটাইলর লাখান লাগি তাখইন খমর ধইরা। খাওয়ার কিতা অভাব আছেনি? ব্রেড, বিস্কুট কেক আরও খততা তাইনোর ফ্যাক্টরীত বানাইন। আর আফনে খইরা খাওয়াইবা কিতা? অউ নেউকা Beggary ফ্যাক্টরীর খাগজপত্র।
অফিসার- আপনার উনি Baker! নিজস্ব Beggary, থুক্কু Bakery ফ্যাক্টরী আছে কাগজ দেখে বুঝলাম। আগে বুঝিয়ে বলবেন তো! আপনার ভিসা হয়ে যাবে। ২ ঘন্টা পর এসে পাসপোর্ট নিয়ে যাবেন, Congratulation!
ভাবী- এইটা আবার কোন লুশন? খায় না মাথাত দেয়?

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form