আমরা মনে করি মানসিক রোগী মানেই ‘‘পাগল’’৷ আমরা অধিকাংশ মানুষ এই ভুল ধারণা পোষণ করি। মানসিকভাবে অসুস্থ মানে পাগল নয়, এই সহজ সত্যটা বুঝতে মানুষের বহু সময় লেগেছে এবং এখনও লাগছে৷ মানসিক রোগীকে পাগল বলা সামাজিক অপরাধ। মানসিক রোগ হচ্ছে মনের অসুখ। শরীর ও মন নিয়েই মানুষ। মানুষের শরীরের যেমন অসুখ হয়, মনেরও তেমনি অসুখ হয়। শরীরের অসুখ আমরা সহজেই মেনে নিই। কিন্তু মনেরও অসুখ হবে- ব্যাপারটা আমরা ঠিক মানতে পারি না। আমরা মানতে পারি বা না পারি, মনের যে অসুখ হয় এটা বৈজ্ঞানিকভাবে বলা হয় মানসিক রোগ। মানসিক রোগীদের ‘‘পাগল’’ অমানবিক ও অপমানকর অপবাদ না দিয়ে তাদের মানসিক ভারসাম্যহীন বলা উত্তম। জীবনে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা বা দুর্ঘটনার প্রভাব প্রভৃতি কারণে সাধারণত মানসিক রোগ হতে দেখা যায়। এছাড়াও কর্মসংস্থানের অভাব, মাদকাসক্তি, দরিদ্রতা, নিরাপত্তার অভাব, আতঙ্ক, অহেতুক গালাগাল, দোষারোপ, দুর্ব্যবহার করে, যা মানুষের মনে ছোট ছোট বিষণ্ণতার জন্ম দেয়, এই বিষণ্ণতা ধীরে ধীরে মানসিক চাপে পরিণত হয়৷ এই মানসিক চাপ কেউ সহ্য করতে পারে আর কেউ না পেরে হয়ে যায় মানসিক রোগী৷ তখন তাদের পাগল বলে অবজ্ঞা, অপমান করাসহ চিকিৎসা বঞ্চিত রাখা হয়। কোনো পরিবারে এ ধরনের রোগী থাকলে সেই পরিবার যেন হয়ে ওঠে ‘‘কলঙ্কিত’’ পরিবার। সামাজিক বৈষম্য ও লোকলজ্জার ভয়ে ওই পরিবার ও ব্যক্তিকে হেয়কর ও লাঞ্ছিত জীবন যাপন করতে হয়। তবে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের অবদানে বর্তমানে অনেক রোগীরা অসুস্থতা থেকেও মুক্ত হতে পারে।