ছাগল মোদের কারবাড়ী

একলোক হাতে একটি কাঁঠালপাতার ডালের ছায়াতলে পথ হাটছে, আর পেছন পেছন একটা ছাগল পাতার লোভে লোকটার পিছু পিছু আসছে। ছাগল কাঁঠাল পাতা খুব পছন্দ করে। কাঁঠাল পাতা দেখলে ছাগলের আর হুঁশ থাকে না, ছুটে যায় পাতা্সুদ্ধ গাছ দখল করার জন্য। ছাগলের সাথে কাঁঠাল পাতার সম্পর্ক অনেক প্রাচীনতম। ছাগল অতি নিরীহ প্রানী। ছাগলে কামরিয়েছে আমি কোনদিন দেখিনি। তবে শিং থাকুক বা না থাকুক ছাগলে গুতা দেয়। ছাগল ব্যাপক পাঁজি। একবার ছাড়া পেলে আর ধরা মুশকিল। গ্রামের সকল গাছগাছালি জায়গা-জমি, ক্ষেতগুলোকে তারা নিজের মনে করে। ছাগলে মাঝেমাঝে জিদ করে। তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সহজে হাটান যায় না। তখন ছাগল শক্ত হয়ে দাড়িয়ে থাকে। যখন ছাগলের এমনি ভাব জাগ্রত হয়- তখন গলায় গামছা অথবা দড়ি বাধিয়া টানিয়া হেচরাইয়া নিতে হয়। ছাগলে যখন বুঝিতে পারে, আর ভাব নিয়া লাভ নাই, তখন সে হাল ছারিয়া দেয়। ছাগলের বিভিন্ন রুপ, আবার অনেক ভাগ / ক্যাটাগরী আছে। যাহা নিম্নে ফটো ও সংক্ষিপ্ত বর্ননা দিয়ে বুঝান হইল।
ছাগল ছাগল ডাক পাড়ি

১) দলনেতা (গোত্র প্রধান)
এরা ছাগলদের নেতা। এদের আংগুলি হেলনে অনন্য ছাগল পরিচালিত হয়। ইহারা মাঝে মাঝে মানুষের বেশ ধারন করে। নেতা হইবার ও খায়েস হয়। মানুষ তখন তাহাদের নেতা বানায়।

২) বহুরুপি ছাগল
ইহারা নিজেদের গোপন ইচ্ছাকে সফল করার জন্য অন্য বেশ ধারন করে।ছাগলীয় সভাব/চরিত্র গোপন করিয়া মানুষ প্রজাতীর সহিত মিশিয়া থাকে। সুজোগ বুঝিয়া পুনরায় নিজ চরিত্র ধারন করে।

৩) সুবেশী ছাগল
এরা অত্যন্ত বিনয়ী, সুবেশ ধারি হইয়া থাকে। চোখে হালকা প্রশাধন ও মুখে হাসি লেগে থাকে। মিষ্টি মিষ্টি কথা বলিয়া- খুব সহজেই অন্যদের পটিয়ে ফেলে, নিজদের কর্ম সম্পাদন করে।

৪) লুল ছাগল
এরা খুবই লুল টাইপের হয়ে থাকে।আড়ালে, জানালার ছিদ্র, বাথরুমের ভেন্টিলেটর হইতে চোখ দিয়া মনের লুকাইত বাসনা পুরন করে। বিভিন্ন বইয়ের দোকান ও হকারদের নিকট হইতে জানা যায় যে, ও আমার রসের ভাবী.... এই জাতীয় চটি বইগুলো ইহারা সবচাইতে বেশি কিনিয়া থাকে।

৫) কৌশলী ছাগল
ইহারা খুবই কৌশলী হইয়া থাকে। নিজদের রক্ষা করার জন্যে ইহারা- শত্রুর ছায়া তলে আশ্রয় নিয়া থাকে। শত্রুও ইহাদের পরম আদরে আশ্রয় দিয়া থাকে।

৬) কমান্ডো ছাগল
ইহাদের প্রশিক্ষন চলে গোপন জায়গায়। কিভাবে খাদ্য সংগ্রহ করিতে হয়। তাহা এই সব ট্রেনিং সেন্টারে শিখন হয়। অন্য প্রজাতীর কিছু জীব ইহাদের সর্বাত্বক ভাবে সাহায্য করে।

৭) স্যুইসাইডাল (জীবনবাজি রাখা ছাগল)
এরা ছাগল প্রজাতীর একটা গুরুত্বপূর্ন অংশ। আদর্শের জন্য এরা নিজদের জীবনকেও তুচ্ছ মনে করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য ধরা খইয়া মুগুরের বারি, গনপিটুনিতে মরিয়া গিয়া যত্রতত্র এমনি ভাবে পরিয়া থাকে।

৮) বোকা ছাগল
এরা খুবই সরল সোজা আর বোকা টাইপের হইয়া থাকে। দলনেতাদের খুব প্রিয় পাত্র। এরা কোন প্রশ্ন করে না। দলনেতার সামান্য কথায় কিছু না বুঝিয়াই ইহারা একটা চিৎকার দিয়া, শুন্যে লাফ দিয়া ওঠে। কিছুদিন পরে অবশ্য ঐ ছাগলেরা ভাবে- ধুর আমি ছাগলের মত কিছু না বুঝিয়াই লাফ দিয়াছি।

৯) পরনির্ভরশীল ছাগল
ইহারা সব সময়ই পরনির্ভরশীল হয়। অন্যের মাথায় বন্দুক রাখিয়া গুলি করে। নিজদের পায়ে ইহারা চলিতে পারে না। বড় কোন গোত্রের সাথে বন্ধুত্ব করিয়া চলে।

১০) মরিয়া ছাগল
এরা নিজেরা বাচার জন্য যে কোন ধরনের রিক্স নিতে পারে। যে ভাবে হউক বাচিয়া থাক। তারপর টার্গেট এর খোজে এরা বেড়িয়ে পরে।

অবশেষে- এত লম্বা ছাগলের কাহিনীতে ছাগলেরা গাছে উঠিয়া পড়িয়াছে। ছাগলদের এই মহান উন্নতির সহায়কে একটি "ছাগ" ছড়া উপহার দিয়ে ছাগবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করিলাম।

ছাগল ছাগল ডাক পাড়ি,
ছাগল মোদের কারবাড়ী।
যারে ছাগল খোয়ারে যা,
কাঁঠাল পাতা চিবিয়ে খা।
এই জমিনে ল্যাদাসনে আর,
তোর ল্যাদাতে নেই কোন সার।

Admin

Amir hossain is a social article writer. he likes to share knowledge and Interested research content of biodiversity, climate, travel, photography

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form