ওই, হাছা কইরা ক! তোর পোলা-মাইয়ার বাপ কেডা?

ওই, হাছা কইরা ক! তোর পোলা-মাইয়ার বাপ কেডা?

ভাদ্র মাস কাদাঁ মাটির রাস্তা। বৃষ্টি আসলে ভড়ভড়া প্যাঁকে ভইরা যায়। কয়েদিন বৃষ্টি হয় নাই। তারপরও রাস্তা যে শুকনা, তা না। পা টিপেটিপে হাঁটা লাগতেছে। একটু অসাবধান হইলে কাপড় চোপড় তো নষ্ট হবেই, কোমরও ভাইঙ্গা যাইতে পারে। আর এই তামশা যদি মাইনষে দেখে, হাসাহাসি করবে। চলতে চলতে হঠাৎ চোখের দৃষ্টি চইলা গেলো মুন্সিবাড়ির রান্না ঘরের পেছনটায়। এক কাঁঠালগাছের ছায়াতলে দুইটা কুকুর সঙ্গমে লিপ্ত। পাড়ার সকল ছেলেরা মুন্সিবাড়ির কাঁঠাল গাছতলার আশপাশে আইসা জড়ো হইছে। তারা ব্যাপক মজা পাইতেছে। মুন্সিবাড়ির মেয়ে বউরা এই তামাশা দেইখা মুখে আঁচল দিয়া হাসিমুখ লুকানোর চেষ্টা করতেছে। সমানতালে লজ্জা লুকানোরও চেষ্টা চলতেছে। বাঙালি নারীর মতো এমন যুগপৎ আনন্দ আর লজ্জা পাওয়ার বিশেষ গুণ বুঝি আর কোন অঞ্চলের রমণীদের নাই। এক কুকুরের সাথে আরেক কুকুরের সঙ্গম দেখাও যে বিনোদন, তা এই মানুষগুলো খুব ভালভাবেই জানে। এমন দৃশ্য দেইখা তারাও প্রভূত মজা পাইতেছে। কুকুর নির্লজ্জ, পাবলিক প্লেসেই কুকুরেরা এসব কইরা, এ পাড়া থেকে ওপাড়া ঘুইরা বেড়ায়। অন্য অনেক প্রাণীর মতো রক্তের আত্মীয়ের সম্পর্কের বিধি নিষেধ কুকুর সমাজে নাই। ঘুরতে ঘুরতে যেখানেই সঙ্গী জোটে, সেখানেই মনের বাসনা পূরণ করে। আহা! গত কয়েক মাস যে সঙ্গী ছিল, যার সাথে সংসার ছিল, তার যেন আর পাত্তা নাই। কোন কুকুরের পেটে কার সন্তান, কোন পুরুষ কুকুর’ই তা জানে না। আসল বাবা যেই হোক, বুকের ছাতি চওড়া কইরা পুরুষ কুকুর কুকুরীর পাশে হাঁটে, বাচ্চাদের আগলায়ে রাখে। বাচ্চা হবার পর, বাপের দায়িত্ব পালন করে। কুকুরীকে একবারও জিগায় না- ওই, হাছা কইরা ক! তোর পোলা-মাইয়ার বাপ কেডা?

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form