এক ভাবী তার স্বামীকে খুব সন্দেহ করতো। তাই তাদের মধ্যে প্রায় সব সময়য়ই রাগারাগি ও সংসারে অশান্তি চলতে থাকে। ভাবী মনে করে তার স্বামী পরনারীর প্রতি আসক্ত বা পরকীয়া করছে। কারন ভাই প্রায় সময় কাজের জন্য বাড়ীর বাইরে থাকতে হয়। কখনো ৭-৮ দিন থাকতে হতো। তাই ভাই বাড়ী আসলেই শুরু হয়ে যেতো ঝগড়া। ভাই অনেক চেষ্টা করেও ভাবীর সন্দেহ ভাঙ্গাতে পারেনি। ভাই ভাবীর কারনে শান্তির স্বার্থে মা-বাবা ছেড়ে আলাদা সংসার করছে। ভাবীর সাথে আবার শাশুড়ি-ননদ, দেবরদের সাথে তেমন একটা সম্পর্কও নেই। তাদের আলাদা সংসার। হটাৎ ভাবী একদিন দেবরকে বলে- ও ভাই, তুমি আমাকে বাচাঁও। কারন তোমার ভাইকে আমার সন্দেহ হয়। সে অন্য নারীর সাথে পরকীয়া করছে। এই কথা শুনে দেবর মনে মনে চিন্তা করলো যে, এইবার ভাবীকে তোষামোদ করা যাবে। অনেকদিন আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলো ভাবীকে তোষামোদ করার জন্য কিন্তু কোনও সুযোগ পাচ্ছিলনা। তাই আজ এই সুযোগ সে হারাতে রাজী নয়। এতদিন ভাবী আমাদের মা-বাবা ভাই-বোনকে কোন টাকা-পয়সা দিতে দেই নাই। এবার সুদে আসলে অাদায় করে নিবো। তাই ভাবীকে দেবর বলল- ভাইয়ের এই রোগ সারানো কোন ব্যাপারই না। এটা আমার কাছে ওয়ান-টুর ব্যাপার! আমার জানাশোনা এক হুজুর আছে তার পানি পরা খেলে এবং তাবিজ নিলেই ভাই ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু প্রথম বারেই ৫০০০ হাজার টাকা হাদিয়া লাগবে। ভাবী সাথে সাথে দেবরকে টাকা দিয়ে দিলো। দেবর তখন নিজেই একটি তাবিজ কিনে তার মধ্যে কিছু ভরে এবং একটি বোতলে কলের পানি ভরে ভাবীকে দিলো। আর বলল- এরকম তাবিজ আরও কয়েকবার নিতে হবে। হুজুর বলেছেন ভাইয়ের রোগটি খুবই জটিল। নইলে ঐ পরনারীর প্রতি ভাই স্থায়ীভাবে মন দিয়ে ফেলবে কিংবা বিয়েও করে ফেলতে পারে। ভাবী এই কথা শুনে আরও দুর্বল হয়ে গেলো। তখন ভাবী বলল- ও ভাই, টাকা যা লাগে আমি দেবো। তখন দেবর বলল- ভাই যে বালিশে ঘুমায় সেই বালিশের নীচে তাবিজ রাখতে হবে। আর এই পড়া পানি অন্য পানির সাথে মিশায়ে বা চিনির শরবতের সাথে মিশায়ে খাওয়াতে হবে, দিনে ২-৩ বার। এইভাবে দেবর ভাবীর কাছে থেকে অনেক টাকাই হাতিয়ে নিতে থাকলো। হটাৎ একদিন ভাই ভাবীর জন্য ভালো ২ টি শাড়ী, গহনা, কসমেটিকস ও প্রসাধনী এনেছে ভাবীকে খুশি করার জন্য। তাই সেদিন ভাবী ভাইয়ের সাথে খুব একটা উচ্চবাচ্য করেনি। আর ভাইও নীরব ছিল বেশ। ভাই ভয়ে ভয়ে ভাবীর সাথে বেশী কথা বলেনি। তবে যে কথাগুলো ভাবীর সাথে বলেছে তাতে ভাবী খুব খুশী হয়েছে। তাই পরের দিন দেবরকে বলে- ওরে ভাই তোর আনা তাবিজ অনেক কাজ হয়েছে। আজ তোর ভাই খুব ভালো। পরের বার ভাই বাইরে থেকে এসে ভাবীকে বলে- তোমার কাছে যে, বেশ কিছু টাকা রেখেছিলাম টাকা গুলো দাও। তখন ভাবী বলে- ঐ টাকার মধ্যে থেকে বেশ কিছু টাকা খরচ হয়ে গেছে। তখন ভাই বলে- কি কাজে টাকা গুলো খরচ করেছো? তখন ভাবী আর সদুত্তর উত্তর দিতে পারেনি। তখন ভাই ভাবীকে বলে- তুমি নিশ্চয় পরপুরুষের সাথে পরকীয়া করে টাকা গুলো তাকেই দিয়েছ। তোমাকে এখন থেকে বিশ্বাস করা যাবে না। এই কথা শুনে ভাবী দেবরকে বলে- ওরে ভাই, তোমার তাবিজের এতো জোর! তোমার ভাই আজকাল উল্টাপাল্টা কথা বলে। এখন তোমার ভাই উল্টা আমাকেই সন্দেহ করছে। তাই তোমার ভাই আগেই ভালো ছিল। তুমি এখন আমাকে বাঁচাও আবার, নইলে আমি বিতাড়িত হতে যাচ্ছি সংসার থেকে। তখন দেবর ভাবীর সব কথা শুনে বলে- ভাবী কোন চিন্তা করবেন না, আমি উলটা তাবিজ এনে দিবো। তাতে ভাই আবার পূর্বের মতো হয়ে যাবে। তবে উল্টা তাবিজে ডবল টাকা লাগবে। পরের দিন ভাবীকে বলে- ও ভাবী, তাবিজ হুজুর বলেছে, এখন আর তাবিজে কাজ হবে না। তবে মা-বাবার সাথে মিলেমিশে চললে নাকি ভাইয়ের মন ভালো হতে পারে নতুবা ভাই নাকি দ্বিতীয় বিয়ে করে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন ভাবী বলে- ও ভাই, তুমি মা-বাবার সাথে মিল করে দেও, আমি তাতে রাজি। তবুও স্বামীর ভাগ কাউকে দিতে রাজি না।
Tags
গল্প