কষ্ট খোর মানুষ

রাতে না খেয়ে থাকা মানুষ যদি আগামীকাল সকালে কাজের জন্য তৈরী হয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায় তাহলে বুঝবেন মানুষটা 'কষ্টখোর'। না খেয়ে থাকা মানুষগুলো চট করে টূপাটূপ কষ্ট গিলে খেতে পারে। অন্ধকার ঘরের মধ্যে প্রতিরাতে শব্দহীন ভাবে কষ্ট খেয়ে তার সাথে এক গ্লাস পানি খেয়ে ঘুমিয়ে যাবে। মাথার উপর আগুনের ফুলকি ঝরছে তারপরও দেখবেন মানুষগুলো মানুষের সাজে সেজে কাজের জন্য বের হয়ে গেছে। প্রচণ্ড আকাশের কান্নার মধ্যেও মানুষের সাজ আছে সাথে এক্সট্রা একটা ছাতা মাথার উপর ধরে রাখা হবে। কষ্ট চেপে রাখার র্ধৈয্য- আচ্ছা কতোটুকু র্ধৈয্য পেলে মানুষ কষ্ট চেপে রাখতে পছন্দ করে? কষ্টের ঝুরিতে প্রতিদিন একটা সাদা কাগজে কষ্ট জমিয়ে রাখার সাহস কত জনের আছে? চট করে চোখের কোনায় পানি টলমল করার পরও কোন এক ফাকে চোখ মুছে সবার সাথে তাল মিলিয়ে হাসবে। একটু বুঝতে দিবে না আপনাকে। সেই সময়টা খুব কঠিন, যে সময়ে চোখের পানি ফেলতে হয়। কিন্তু ওই সময়টা তার চেয়েও অনেক বেশি কঠিন, যে সময় চোখের পানি লুকিয়ে হাসতে হয়। আপনার খেয়ালের অগোচরে ঘটে যাবে অনেক কিছু। স্বপ্ন হারিয়ে একটা পরিবারকে জড়িয়ে আগলে রাখার চেষ্টায় ঘুম হারিয়ে যাবে। প্রতিদিন রাতে বারান্দায় দাড়িয়ে আগামী কালের স্বপ্ন নিয়ে ভাববে। এই মানুষগুলো কাল নিয়ে বেশি টেনশন করে।

কষ্ট চেপে হাসা, কষ্টের ভার কতোটুকু বাড়িয়ে দেয়? আমার সাথে একবার এক মানুষের সাথে দেখা হয়েছিলো। প্রতিদিন রাত দশটার দিকে মানুষটা ঘরের এক বসে চেয়ারে গা হেলিয়ে নাকি কাদে। সবকিছু আছে তারপরও কোনকিছু নাকি নিজের মনে হচ্ছে না। আমি তারসাথে বসে সিগারেট খেয়েছি। চার্জ লাইটের আলোতে মানুষটা কান্না লুকিয়ে, আমার সাথে হেসেছে। কি অদ্ভুত ব্যাপার গোল্ডলিফের ধোঁয়াতে কষ্ট উরে যায়। হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা লুকোতে নেশার ঘোরে শান্তি পেতে চায়। মানুষগুলো হার্ট খুলে কষ্ট জমিয়ে তালা মেরে রাখতে পছন্দ করে। ''কম্বিনেশন লক'' আট ডিজিটের লক তার একান্ত সম্পদ কারো জানার অধিকার নেই। কি পরিমান সেখানে কষ্ট লুকানো আছে? প্রচণ্ড ডেম কেয়ার মানুষগুলো হঠাৎ করে প্রচণ্ড কেয়ারী হয়ে যাবে। পরিবারের জন্য, প্রেমিকার জন্য, হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসার জন্য। চেহারার মধ্যে যন্ত্রণার ছাপ থাকবে না। তারপরও প্রচণ্ড যন্ত্রণার ভারে ঝুকে যাওয়া শরীর সোজা হয়ে আপনার সামনে এসে বসবে, পাশাপাশি হেটে যাওয়ার সময়ও আপনি বুঝতে পারবেন না। আর একসাথে ঘুমোতে যাওয়ার সময়ও না। সীমাহীন যন্ত্রণা চোখে কোনদিন প্রকাশ হবে না, তিলে তিলে হারিয়ে যাবে তারপরও আপনি বুঝবেন না। অতি সিমাহীন কষ্ট ঘারে চেপে বইয়ে চলবে। সব কিছু মেনে নিয়ে, মাথায় বিশাল একটা ''দায়িত্ব'' মেনে চলতে চাইবে। কি আর্শ্চয, এদের নাম মানুষ। প্রচণ্ড যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাওয়া ''মধ্যবিত্ত ক্লাসে কষ্টখোর মানুষ''।

Admin

Amir hossain is a social article writer. he likes to share knowledge and Interested research content of biodiversity, climate, travel, photography

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form