পীরের কেরামতি

বিয়ে হল সাতটি বছর, সন্তান আসে নাই কোলে
দিন কাটে তাই রহিম মিয়ার, নিদ্রা আহার ভুলে।
শ্বাশুড়ী বলল- যাওনা বাবা, পাগলা পীরের কাছে
খুলে বল তারে মনের কথা, ইচ্ছে যত আছে।
পরের দিন'ই রহিম মিয়া, ছুটল পীরের বাড়ি
সাথে নিয়ে ফলফলাদি, মিষ্টি ভরা রসের হাড়ি।
পৌঁছিল এসে ঠিক দুপুরে, যেখানে আছে পীর
দেখল সেথা খানকা ঘিরে, প্রচুর লোকের ভীড়।
পীরের হাতে সোনার আংটি, গলায় টাকার মালা
চেয়ারখানা শৌখিন বটে, হাতে লাখ টাকার বালা।
ভাবলো বসে রহিম মিয়া, গালে রেখে তার হাত
পীরে তাকে সন্তান দেবে, রক্ষা হবে তাহার জাত।
অপেক্ষার পরে ডাক এসেছে, 'রহিম মিয়া' বলে
সুড়সুড়িয়ে পীরের কাছে, রহিম মিয়া এলো চলে।
বলল পীরে- 'কি চাই বাচা'? আর্জি কি তোর বল?
ধনসম্পদ লাগবে নাকি? ক্ষমতার রদবদল!
রহিম মিয়া বলে- হাত দুটো পীরের পায়ে তুলে
বিয়ে হল সাতটি বছর, সন্তান আসে নাই কোলে।
যেভাবেই হোক একটি সন্তান, করুন আমায় দান
রক্ষা হবে জাত আমার, শান্ত হবে বিবির প্রাণ।
একটু হেঁসে বলল পীরে, এই বুঝি তোর দাবী?
থাকতে আমি চিন্তা কিসের? সন্তান পেয়ে যাবি।
বেজায় খুশিতে রহিম মিয়া, বলল- হেঁসে তবে
বলুন বাবা এখন আমায়, কি কি করতে হবে?
পীরে শুধাল- এই নে তাবিজ, বউয়ের গলায় দিবি
পনের তারিখ ওরশ আছে, ছাগল নিয়ে যাবি।
আনবি সাথে হাদিয়ার টাকা, ফলফালাদি আর
আরও আনিস বউটাকে তোর, করে দেব ফুঁক-ঝাড়।
ছাগল দিলো, হাদিয়া দিলো, তাবীজ নিলো ঢের
বউয়ের পেটে সন্তান জন্মলো? আজও পেলনা টের।
বছর তি'নেক চলেই গেল, সন্তানের নেই দেখা
ক্লান্ত রহিম বুঝিতে পারে, সে সবই ছিল ধোঁকা।
হায়রে মুমিন বুঝবি কবে? পীরের বুদ্ধির চিকন ধার
দূর্গাপূজা আর দরগাহ পূজায়, মিলেমিশে আজ একাকার।

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form