প্রেমের রাজ্য

প্রেমের রাজ্য দখল করে প্রেমিক বলে সর্বনাশ !
অর্ধেক বলেছে শাহজাহান আর অর্ধেক চণ্ডীদাস।
টাকার জোরে শাহজাহান গরিব নিয়ে উপহাস,
বার বছর নাকি বরশি বাইছে মানব গাঁধা চণ্ডীদাস।
টাকার খেলায় শাহজাহান একখান তাজমহল গড়িয়া,
মানব গাধা চণ্ডীদাস বরশি বাইছে বার বছর ধরিয়া।
প্রেম পিরিতি এমন কি আর অাসল নকল জানে,
রুবেলেরে লইয়া হ্যাপি কেমন টানা টানে।
পিরিতের পাগল প্রভা আর হ্যাপির মত বোকা,
চণ্ডীদাস শাহজাহান সেজে দিয়েছে তাদের ধোঁকা।
আজ সম্রাট শাহজাহান গাধা চণ্ডীদাস,
আজ তোমাদের কারনে পিরিতের সর্বনাশ !
পিরিতি করিয়া আসল প্রেমিক হয়ে গেছে ধন্য,
তোমাদের পিরিত ছিল হাট-বাজারের পন্য।

চণ্ডীদাস নামক এক প্রেমিক পুরুষ ছিলেন, একযুগ ১২ বছর এক নদীর তীরে বসে থাকতেন। কিসের আশায়? সেটা আমাদের সবারই জানা। কিন্তু তাঁর হাতে থাকত একটি মাছ ধরার ছিপ। সেই ছিপ ফেলে তিনি চুপচাপ বসেই থাকতেন নদীর ঘাটে। সেই পথ দিয়েই রজকিনী নামের এক গ্রাম্য তরুণী যাওয়া-আসা করত। সেই তরুণী প্রতিদিন বিণুনী দুলিয়ে তার সখীদের সাথে নদীতেই পানি তুলতে যেত। চন্ডীদাস বসে থাকে ছিপ নিয়ে, আর রজকিনী সেই পথ দিয়ে পানি তুলে নিয়ে যায়। এইভাবে দিন যায়-দিন আসে। চন্ডীদাসের সাথে রজকিনীর কোন কথা যে হয়না তা নয়। কিন্তু সেটা কেউ কাউকে বুঝতে দিতে চায় না। একদিন রজকিনীর কি খেয়াল হয়। সে চন্ডীদাসকে গিয়ে সুধায়, এতদিন তাকে দেখেই এসেছে ছিপ ফেলে বসে থাকতে, সে কি কোন মাছ আদৌ ধরতে পেরেছে কিনা? তখন চন্ডীদাস মুচকি হেঁসে বলেন- "এই মাত্র আমি মাছ ধরলাম"। এরপর চলতে থাকে কাহিনী নিজের মত। এই হচ্ছে চন্ডীদাস আর রজকিনীর প্রেম কাহিনীর সারমর্ম।

কিন্তু মজার কাহিনী হচ্ছে- আধুনিক কালের চন্ডীদাসেরা, একটা নয় কয়েকটা ছিপ একসাথে ফেলে। তাও আবার ভিন্ন ভিন্ন ঘাটে। আর রজকিনীরাও ভিন্ন ভিন্ন ঘাটে গিয়ে জল তুলে আনে টোপ ও গিলে ফেলে যখন ইচ্ছা তখন। গেলার সময় বেশীরভাগ সময়ই ভাবেনা কিছু, কিংবা উগরোবার সময়ও ভাবেনা। আবার চন্ডীদাসেরা এখন আর ১২ বছর ছিপ ফেলে বসে থাকেনা। তারা একটার পর একটা ছিপ ফেলতেই থাকে। অনেক সময়ই একসাথে অনেক খানে তাও আবার সেটা ২/৩ মাসের বেশী সময় ধরে না। আসলে এখন আধূনিক যুগ। তাল মিলায়ে না চলতে পারাটাই লজ্জার বিষয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form