মানবতা আর কোন সৃষ্টিতে নেই

অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে আসা সকল সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হলো মানুষ। মানুষের মধ্যে যে শক্তিগুলো রয়েছে, তা অন্য কোন সৃষ্টির মধ্যে নেই। মানুষ পাশবিকতা এবং মানবতা মিশ্রিত সৃষ্টি। পাশবিকতা অন্যান্য সৃষ্টিতে পাওয়া গেলেও মানবতা আর কোন সৃষ্টিতে নেই।
অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে আসা সকল সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হলো মানুষ | আমির হোসন

মানবতা এমন একটি আদর্শ যেখানে জাতি, বর্ণ ও স্থান ভুলে মানুষ মানুষের পাশে দাড়ায়। মানবতা ও মনুষ্যত্ব বিষয়টি মানুষের চিন্তা চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভরশীল। এটি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস বা অবিশ্বাসের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। একজন সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী ব্যক্তির কাছে নীতি নৈতিকতার বিষয়টি সুনির্দিষ্ট। এই মহাবিশ্বের সমস্ত কিছুর একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট বা ধর্ম রয়েছে। অক্সিজেনের ধর্ম লোহার সাথে বিক্রিয়া করে মরিচা তৈরী করা আর লোহার নমনীয়তার ধর্মের কারণেই একে পিটিয়ে পাত করা যায়। এই বৈশিষ্ট্য বা ধর্মসমূহের মাধ্যমেই যেকোন পদার্থকে চিহ্নিত করা যায়। শুধু জড় জগতে নয়, জীব জগতে ও প্রত্যেকটি জীবের এমন স্বতন্ত্র কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা দিয়ে তাদেরকে চিহ্নিত করা যায়। তেমনিভাবে মানুষেরও কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বা ধর্ম আছে। এই ধর্ম বা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যগুলোকেই আমরা মনুষ্যত্ব, মানবতা বা মানবধর্ম বলে থাকি। তবে মনুষ্যত্ব বা মানবতার ক্ষেত্রে শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলোকে পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয় এবং আচরণগত ও মনস্তাত্বিক বৈশিষ্ট্যগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয়। অতএব বলা যায় যে, আচরণগত বা মনস্তাত্বিক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকলে কোন ‘‘Homo sapiens’’ কে মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করা যায় তাকেই মনুষ্যত্ব বা মানবতা বলে। অথবা  আরও বলা যায় যে, চারিত্রিক গুণাবলি এবং মনস্তাত্বিক বৈশিষ্ট্যসমুহ অর্জনের মাধ্যমে একজন মানুষ পরিপূর্ণ মানুষে পরিনত হয় তাকে মনুষ্যত্ব বা মানবতা বলে। একজন স্রষ্টায় বিশ্বাসী ব্যক্তি বিশ্বাস করেন যে, এই মহাবিশ্বকে সৃষ্টি করেছেন সর্বশক্তিমান স্রষ্টা এবং তিনিই এই মহাবিশ্বের প্রতিপালক। তিনিই সমস্তকিছুর বৈশিষ্ট্য বা ধর্মটিকে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তিনিই মানুষের ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যগুলোকেও নির্ধারিত করে দিয়েছেন। একেই আমরা বলি মানবতা বা মনুষ্যত্ব।

কিন্তু এই বৈশিষ্ট্যসমুহ কি? এই বৈশিষ্ট্যসমুহ স্রষ্টা মানুষের স্বভাবের মাঝেই দিয়েছেন। যেমন ধৈর্য, মায়া-মমতা, ভালোবাসা, সহনশীলতা, একতা ইত্যাদি। তবে অন্যান্য প্রাণী এবং মানুষের মাঝে একটি বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে। অনন্য জড়বস্তু বা প্রাণী স্রষ্টা নির্ধারিত এই ধর্মটিকে কখনোই প্রত্যাখ্যান করতে পারে না। তবে এই মহাবিশ্বে একমাত্র মানুষই স্রষ্টার নির্ধারিত ধর্মটিকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে। একটি হিংস্র বাঘিনী যতই ক্ষুদার্থ হোক না কেন, কখনোই নিজের শাবকদেরকে হত্যা করে না। কারণ এটি তাদের ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য। কিন্তু দারিদ্রের কারণে অনাগত কন্যা সন্তানদেরকে খুন করাটা আমাদের সমাজের সাধারণ ঘটনা। তবে এটি কি মানুষের ধর্ম? মানুষ কি তাহলে পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট? কখনোই নয়। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে দিয়েছেন স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি এবং বিবেক বিবেচনা। সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয়ই ভালোভাবেই জানতেন যে, মানুষ তার স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি বলে মানবধর্ম থেকে দূরে চলে যাবে। এজন্য মানব জাতীর সৃষ্টির শুরু থেকেই স্রষ্টা মানুষকে পথনির্দেশ দিয়ে আসছেন। তাঁর নির্ধারিত নিতিমালা এবং মনোনীত মানুষদের মাধ্যমে, যেন মানুষ মানবতার ধর্ম থেকে বেশী দূরে সরে না যায়। স্রষ্টা পথনির্দেশনাকে আমরা ধর্ম বলে থাকি। যদিও প্রকৃতপক্ষে এটি ধর্ম নয় বরং এটি স্রষ্টা মনোনীত জীবনবিধান। মানুষের ধর্ম একটিই আর তা হলো মানবধর্ম। আর এই জীবনবিধানটি জীবনে মানবধর্মটিকে পালনেরই পদ্ধতি।

এখন মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, যদি স্রষ্টাই মানুষকে পথনির্দেশের জন্য এ ধর্ম জীবনবিধান প্রণয়ন করেন তাহলে এ পৃথিবীতে হাজার ধর্ম সৃষ্টি হলো কেন?
এ প্রশ্নটির উত্তর আমরা বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে খুজে পাই। ইসলাম অনুযায়ী পৃথিবীর প্রথম মানুষ হযরত আদম (আঃ) কে আল্লাহ তাআলা সর্বপ্রথম পথনির্দেশনা দিয়েছিলেন। এরপর তাঁর বংশধররা স্রষ্টাপ্রদত্ত সেই জীবনবিধানটিকে ধীরে ধীরে পরিবর্তন করে ফেলল, যার ফলে তারা মানবতার পথটি থেকে সরে গেল। এরপর আল্লাহ তাআলা দ্বীন বা স্রষ্টাপ্রদত্ত জীবনবিধানটিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আরেকজন রাসুল প্রেরণ করলেন। তবে কিছু মানুষ রাসুলের কথা না মেনে পরিবর্তিত জীবন ব্যাবস্থাটি আকড়ে ধরে রইল। এভাবে অনেকগুলো ধর্ম তথা জীবনবিধান সৃষ্টি হলো। স্রষ্টা যুগে যুগে তাঁর মনোনীত মানুষদের মাধ্যমে মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন একজন মানুষ কিভাবে মানবতার পথে চলবে। স্রষ্টা প্রদত্ত জীবনবিধানটির পরিপূর্ণ রূপটি ইসলাম। ইসলাম শুধুমাত্র মানবতার কথা বলে না, কিভাবে মানবতার পথে চলতে হয় তা শিখিয়ে দেয়। এটি শুধুমাত্র মানুষে মানুষে সকল ভেদাভেদ ভুলে যেতে বলে না, কিভাবে মানুষ ধনী-গরীব, কালো-সাদা, সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে কিভাবে এক কাতারে দাঁড়াতে হয় তা শিখিয়ে দেয়। এটি শুধু গরীব অসহায়দের সাহায্য করতে বলে না, কিভাবে ধনীর সম্পদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে গরীবদের অবস্থা উন্নতিতে ব্যাবহারের মাধ্যমে সমাজ থেকে দারিদ্র্যতা দুর করতে হয় তা শিখিয়ে দেয়। এর পরিধি শুধু ব্যক্তির এবং সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়, কিভাবে রাষ্ট্রে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করা যায় এবং কিভাবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা যায়, তার দিক নির্দেশনা পাওয়া যায়। এটি স্রষ্টাপ্রদত্ত পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা এবং মানবধর্ম পালনের পরিপূর্ণ পদ্ধতি।

বর্তমান আধুনিক বিশ্বে মানবতা, মানব সভ্যতা ও মানবাধিকার বিষয়টি বহুল আলোচিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে মূল্যায়িত হচ্ছে। সমাজে, রাষ্ট্রে এমনকি আন্তর্জতিক ভাবে এই বিষয়সমূহের গুরুত্ব অপরিসীম। কারন জীবনের জন্য যেমন অক্সিজেন প্রয়োজন, তেমনি জীবন যাপনের জন্য প্রয়োজন মানবতা, আদর্শ নৈতিকতা ইনসাফপূর্ণ মানবাধিকার।
মানবতা বলতে আমরা সাধারণত বুঝি মানবীয় জাগতিক ও পরলৌকিক জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে তা অনুশীলন করা। যে অনুশীলনের মাধ্যমে সমাজ সভ্যতা বিনির্মিত হয়, মূলত সেটিই মানবতা বা মানব সভ্যতা। মানবাধিকার বলতে তথ্যের অধিকার এবং গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করণ বুঝায়। সুন্দর ও নিরাপদ ভাবে বেচেঁ থাকার জন্য সকল শ্রেণীর মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও সাংস্কৃতিক বিষয়সহ যাবতীয় অধিকার নিশ্চিতকরণ। এক্ষেত্রে আইনের চোখে সবাই সমান। আমরা যদি মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশের বিষয়ে অতীত ইতিহাসের দিকে দৃষ্টি দিই তাহলে দেখতে পাব আদিমযুগের মানুষ সভ্যতা অর্জনে বহু বছর আপ্রাণ প্রচেষ্ঠা চালিয়েছে। সেযুগে বিজ্ঞানের সুবিধাতো দুরের কথা, ভাষাজ্ঞান, পরিসংখ্যান ও তথ্য জ্ঞান না থাকায় মৌলিক অধিকার থেকে তারা দারুন ভাবে বঞ্চিত হয়ে নানা রকম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারী, ঘূর্নিঝড়, সাইক্লোন, সিডর, ইত্যাদী কারণে সমূহ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে মানুষ। সব মিলিয়ে সেই যুগের মানুষকে আজ বর্বর বা অসভ্য বলে চিহিৃত করা হচ্ছে। সেই সময়ের মানব সমাজ অসভ্য বর্বর হলেও তারা অতটা অমানবিক ছিলনা, যা এযুগের একশ্রেণীর সভ্যতার প্রবক্তাদের মাঝে লক্ষ্য করা যায়। কালের বিবর্তনে মহান আল্লাহপাক যুগে যুগে অসভ্য মানবজাতিকে সভ্য করার জন্য প্রত্যেক জাতির কাছে নবী ও রাসুল প্রেরণ করতে থাকেন। এসব নবী ও রাসুলগনের প্রচেষ্টায় নির্মাণ হতে থাকে সভ্যতা। যারা কুসংস্কার, অন্যায়-অবিচার ও অন্ধকার দূর করতে সমাজের মহান শিক্ষক হিসেবে শিক্ষা বিস্তারে ব্রতী ছিলেন। যাদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ দেশে দেশে অঞ্চলে অঞ্চলে তাদের জ্ঞানের আলোতে আলোকিত হওয়ার প্রেরণা পেয়েছে। প্রেরণাই তাদের সভ্য মানুষ হতে শিখিয়েছে, কালের বিবর্তনে সে সব মানুষ আবার অমানুষ ও অসভ্য হয়ে পড়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় নবী ও রাসুলে আবির্ভাবের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে বিশ্ববাসীর রহমত স্বরুপ মক্কা মুয়াজ্জমায় আবদুল্লাহ্র ঘরে জন্ম প্রহণ করেন সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)। তিনি ৪০ বছর বয়সে আল্লাহ প্রদত্ত বাণী প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে রাসুলের মর্যাদা লাভ করে সুদীর্ঘ ২৩ বছর দায়িত্ব পালন করেন। তার মাধ্যমে বিশ্ব মানবজাতী নিয়ামত স্বরুপ একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা মহাগ্রস্থ আল-কোরআন প্রাপ্তির গৌরব লাভ করেন। যে কোরআন দেড় হাজার বছর যাবৎ অবিকৃত অবস্থায় কুল মাখলুকাতের জন্য একটি উত্তম আদর্শ হিসেবে সমাদৃত ও প্রমাণীত হচ্ছে। সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়, সভ্যতা-অসভ্যতা একমাত্র পরীক্ষিত মান দন্ড হলো আল-কুরআন। এই কুরআনের মূল বিষয়বস্তুু হচ্ছে মানব বা ইনসান আর হাদিস গ্রন্থসমূহের বিষয়বস্তু হচ্ছে মানবতা বা ইনসানিয়াত। মানব ও মানবতা দুয়ে মিলে হয় সভ্যতা আর এর বিপরিত হল অসভ্যতা। এই সভ্যতার প্রকাশ ঘটে কিছু লক্ষণে ও কিছু আচরণে। মানব যদি মানবতাবাদী হয় তাহলে আর মানবাধিকার বাস্তবায়নে কোন প্রকার বাধাবিপত্তি থাকতে পারেনা। কিন্তু গোটা দুনিয়াতে আজকের প্রেক্ষাপটে সেই মানবতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সভ্যতার বিপরিতে অসভ্যতার চর্চা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজকের বিশ্বে মানবাধিকার ও মানব সভ্যতার একশ্রেণীর প্রবক্তরাই পক্ষান্তরে মানবতা এবং মানবাধিকারের বিপরিত চর্চা বেশি করছে। পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে এবং আন্তর্জাতিক প্রতিহিংসার প্রতিযোগিতা প্রাণসংহার হচ্ছে অগনিত মানুষের। গোটা বিশ্বে সামরিক সমরাস্ত্র বিশেষ করে আনবিক, পারমানবিক এবং রাসায়নিক প্রকৌশল আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। এই ক্ষেত্রে আমাদের বাংলাদেশের অবস্থা অতটা ভয়াবহ নয়। কিন্তুু স্বাধিন বাংলাদেশের মহান নায়ক রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ সীমান্তে হত্যাকান্ড, পিলখানা হত্যাকান্ড, রমনার বটমূলে হত্যাকান্ড, সাংবাদিক হত্যাকান্ড, রাজপথে হত্যা করে লাশের উপর নৃত্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্ষণের সেঞ্চুরি, শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারী, হলমার্কের অর্থ কেলেঙ্কারী, পদ্মা সেতু সমস্যা, ডেসটিনির সমস্যা, টিপাইমুখ জটিলতা, গ্রামীন ব্যাংক নিয়ে জটিলতা, চোরাচালানী, সুদ, ঘুষ, দুুর্নীতি, অশ্লীল সিডি’র দৌরাত্ম্য, মানবতার বর্জিত কর্মকান্ড আজ দেশের জন্য মারাত্মকভাবে অমঙ্গলজনক। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি, দ্রব্যমূল্যের ঊধ্বগতি, বিদ্যুৎ ও জালানী গ্যাসের মূল্য-বৃদ্ধি, চাকরিতে নিয়োগ বানিজ্য, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড হয়রানীমূলক মামলাসহ নানাবিধ কারণে সাধারণ মানুষ এখন নানারকম জটিলতা ও দুর্ভোগের মধ্যে দিনযাপন করছে। শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, মাদক, যৌতুক, বাল্যবিবাহ, খাদ্যে বিষাক্ত ফর্মালিনের বিষক্রিয়া অস্বাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় মানবতা ও মানবাধিকার চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে নৈতিক অবক্ষয় এবং ঈমানের দুর্বলতা।

রহস্যের মায়াজালে আবদ্ধ মানবজাতিরর মন, এই মনই আবার মানুষকে পরিচালিত করে। মানুষকে ধাবিত করে ন্যায় অন্যায়ের বিভিন্ন গন্তব্যে। মানুষের মন বড়ই বাঁধনহারা ঘুরপাক খেতে খেতে ছুটে চলে, অন্যায়ের দিকে বাঁধনহারা এই মনের অবাধ্যতা। মানুষ বিপর্যয় সৃষ্টি করে, মানবতার বিনাশ করে। মনের এতসব নতিবাচক কর্মকাণ্ড, যদি কেউ না জানে তবে আমাদের মন জানে, আমাদের স্রষ্টা জানে, মবাঁধনহারা নের মাঝে লুকিয়ে থাকা, আমাদের “বিবেক” জানে। কেহ আমাদের এই ভুল কিংবা আপরাধের শাস্তি না দিলেও কিন্তু প্রতিমুহুর্তে “বিবেক” আমাদের শাস্তি দিচ্ছে। আর চূড়ান্ত শাস্তির জন্য অপেক্ষা করছে, পরকালের। মানুষের জন্য মানুষ, সৃষ্টির জন্য মানুষ, স্রষ্টার আনুগত্যর জন্য মানুষ। মানুষের মাঝে মানুষ, মানুষের মাঝে মানবতা, মনুষ্যত্ব ও বিবেক। মানুষ, মানবতা ও সৃষ্টির কল্যাণে, বাঁধনহারা নতিবাচক কর্মকাণ্ড থেকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে, অামরা ও পারি মানব সুশৃংখল বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পরিবর্তন আনতে, পরিবার সমাজ রাষ্ট্র তথা সমগ্র মানব জাতির।

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form